বর্ষাকালে রাসায়নিক মুক্ত সবজি চাষের সহজ পদ্ধতি

বর্ষাকালে রাসায়নিক মুক্ত সবজি চাষের সহজ পদ্ধতি কি জানেন,না জানলে এই পোস্টটি আপনার জন্য খুব উপকার হতে পারে। অনেকে বর্ষাকালে সবজি চাষ ঝামেলা মনে করেন, কারণ বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে সবজি চাষ ভালো হয় না। কিন্তু আমাদের দেখানোর নিয়ম অনুসারে চাষ করলে, সবজি চাষে ভালো ফলন হবে।



বর্ষাকালে রাসায়নিক মুক্ত সবজি চাষ সহজ পদ্ধতি হলো। এখন কম বেশি সবাই সবজি চাষ করে, কিন্তু সবাই লাভবান হয় না। কারণ তারা সবজি চাষের সঠিক নিয়ম জানে না, বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি পড়ুন।

পেজ সূচিপত্রঃ বর্ষাকালে রাসায়নিক মুক্ত সবজি চাষের সহজ পদ্ধতি হলো

বর্ষাকালে রাসায়নিক মুক্ত সবজি চাষের সহজ পদ্ধতি হলো, আমরা এখন খুব সহজেই সবজি চাষ করে থাকি। সাদ বাগানে, বাড়ির আঙিনায়, ছাদে টবে বিভিন্ন উপায়ে অল্প জায়গায় আমরা সবজি চাষ করি। কিন্তু সবজি তেমন ফলন পায় না, কারণ সবজি চাষের সঠিক নিয়ম আমরা জানি না। এইজন্য সঠিক নিয়ম জানতে হবে সবার প্রথমে যে কোন সবজির ভালো যাতে চারা বিজ নিতে হবে। 

এরপর মাটি সবজি চাষের উপযোগী করে তুলতে হবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন বৃষ্টি হলে মাটিতে পানি না জেনে থাকে তাহলে সবজি চাষে পাওয়া সম্ভব। বর্ষাকালে রাসায়নিক মুক্ত সবজি চাষ করতে আর্টিকেলটি পড়ুন।

বর্ষাকালে কি কি সবজি চাষ হয়, এবং চাষ করার পদ্ধতি

বর্ষাকালে রাসায়নিক মুক্ত সবজি চাষের পদ্ধতি হলো বর্ষাকালে যেসব সবজি চাষ করা যায়, বর্ষাকালীন সবজি চাষ করতে অবশ্যই উঁচু জমি নির্বাচন করতে হবে। কারণ বর্ষাকালে জমিতে পানি জমে থাকে এতে ফসলের ক্ষতি হয় হতে পারে। মিষ্টি কুমড়া, করলা, চাল কুমড়া, বরবটি, শসা, পুঁইশাক, শিম, বেগুন ,ধুনদল, পটল, চিচিগা,ঝিঙা, লাল শাক, পালং শাক, কলমি শাক ইত্যাদি এগুলো হলো বর্ষাকালীন সবজি। অল্প সময়ে এবং অল্প জায়গায় এগুলো সবজি চাষ করা যায় চাষ করার পদ্ধতি হলো।

চাল কুমড়াঃ বর্ষাকালীন সবজি হলাে চাল কুমড়া, চাল কুমড়া দোআঁশ মাটিতে চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। কিন্তু চালকুমড়া চাষের জন্য ভালো জাতের বীজ নির্বাচন করতে হবে। এবং নিয়মিত পরিচর্যা করতে হবে। ভালোভাবে চাল কুমড়া চাষ করলে এ সময় বাজার মূল্য বেশি পাওয়া যায়। বাড়ি চালকুমড়া ১, ইপসা চালকুমড়া ১, ঝুপিটর, হীরা চাষ ১,ইত্যাদি। এই চাল কুমড়া গুলো চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়ার যাবে। 

চাল কুমড়া বীজ লাগিয়ে দেওয়ার আগে ২৪ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখবেন। এতে দ্রুত চাল কুমড়ার গাছ গজাবে। হাইব্রিড জাতীয় চাল কুমড়া চাষ করলে মাত্র ৪৫ দিনের মধ্যেই চাল কুমড়া হয়ে যাবে। যদি জমিতে চাল কুমড়া চাষ করেন, তাহলে এক গাছ থেকে আরেক গাছের দূরত্ব রাখবেন ১ ফিট এই নিয়ম চল কুমড়া চাষ করলে লাভবান হবেন।

বরবটিঃ বর্ষাকালে সবচেয়ে বেশি ফলন পাওয়া যায় বরবটিতে। এইজন্য এ সময় বরবটি চাষের উপযোগী সময়। বরবটি খুবই স্বল্পমেয়াদী ফসল, বীজ বপনের পর ফসল ধরতে সময় লাগে মাএ ৩০ দিন। এবং বিভিন্ন জাতের বরবটি রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কেকন নাইটি, এরনা, চিনা বরবটি, লাল বেনি, ঘৃতকুমারী, গ্রীন লং, তোকি, বনলতা ইত্যাদি। 

দোআঁশ থেকে বেলে দোআঁশ মাটিতে বরবটির চাষ করলে ফলন ভালো হয়। বরবটি চাষ করার আগে অবশ্যই জমি ভালোভাবে চাষ করে নিতে হবে। প্রতি শতকের ১০০ থেকে ১২৫ গ্রাম বীজ প্রয়োজন পড়ে। চারা যখনই একটু বড় হবে তখনই মাচা বাউনি টা দিয়ে দিবেন। জমিতে যেন পানির অভাব না হয় এজন্য সেচের ব্যবস্থা করে দিবে। সব সময় আগাছা পরিষ্কার রাখবেন। 

পোকামাকড় রোগ ব্যাধি থেকে মুক্ত রাখতে কোটা জাত করতে পারেন, আবার বাশ আগা নিয়ে জমির মাঝ খানে মাঝ খানে পুতে দিলে পাখিরা এসে পোকামাকড় খেতে পারবে, এতে সবজি পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা পাবে।এতে রাসায়নিক মুক্ত সবজি চাষ হবে, ফলন বৃদ্ধি পাবে।

করলাঃ যদিও সারা বছর চাষ হয়, তবুও বর্ষাকালে করলা চাষের উপযোগী সময়, প্রতি শতক জমিতে ২৫ গ্রাম বীজের প্রয়োজন পড়ে। বীজ লাগিয়ে দেওয়ার আগে ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। করলা চাষ করার জন্য একমাথা থেকে আরেক মাথার দূরত্ব রাখবেন দেড় মিটার। প্রতিটি মাথার মধ্যে দুটি করে চারা রাখবে। 

বাংলাদেশে বেশ কিছু উচ্চ ফলনশীল করলার জাত রয়েছে। বাড়ি করলা ১, বিএনসিটি বস করলা উল্লেখযোগ্য। আরো কিছু হাইব্রিড জাতের করলার আছে এগুলো আপনারা চাষ করতে পারেন বুলবুলি টিয়ার কাক ৮৮ মিনিস্টার গৌরব গ্রীন রকেট হীরা মানিক প্যারট ইত্যাদি হাইব্রিড করলার জাত সমূহ।

আবার খেয়াল রাখতে হবে গাছের গোড়ায় যেন পানি জমে না থাকে। নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করতে হবে, পোকামাকড় রোগব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে আগের নিয়মটা ফলো করতে পারে এতে করলা বিক্রি করে লাভবান হওয়া সম্ভব।

মিষ্টি কুমড়াঃ বর্ষাকালীন সবজির মধ্যে মিষ্টি কুমড়া অন্যতম একটি সবজি। আপনারা চাইলে এ সময় মিষ্টি কুমড়া চাষ করতে পারেন। চর অঞ্চলের পলি মাটিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ ভালো হয়। জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ দোআঁশ মাটি বা এটেল দোআঁশ মাটি কুমড়া চাষের জন্য উত্তম। প্রতি শতাংশ প্রতি ৩ গ্রাম বীজ লাগে। 

বাড়ির মিষ্টি কুমড়া ১ বাড়ির মিষ্টি কুমড়া ২ সুইট বল ইয়েলো পাত জাতের মিষ্টি কুমড়া চাষ করতে পারে। মিষ্টি কুমড়ার বীজ লাগিয়ে দেওয়ার আগে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন। ভাল জাতের মিষ্টি কুমড়া লাগালে ভালোভাবে পরিচর্যা করলে ৫০ দিনের মধ্যেই ফলন পাওয়া যায়।

শিমঃ আপনারা চাইলে বর্ষাকালে শিম চাষ করতে পারেন, বর্ষাকালে খুব সহজে শিম চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব। কারণ বাজারে শিমে চাহিদা অনেক বেশি, বর্ষাকালে রাসায়নিক মুক্ত সবজি চাষের সহজ পদ্ধতি হলো। বর্ষাকালে শিম গাছ দূরত্ব বৃদ্ধি পায়, এবং তাড়াতাড়ি ফলন পাওয়া যায়। 

শিম গাছগুলো বড় হলেই চারিদিকে আগাছা পরিষ্কার করে জৈব সার দিতে হবে। শিম গাছে নিয়মিত যত্ন নিলে রোগ বালাই তেমন দেখা যায় না। মাঝে মাঝে শ্যাম্পু পানি নিয়ে স্প্রে করে দিলে রোগবালাই কম হয়।

ধুন্দুলঃ আরো একদিন বর্ষাকালী সবজি হলো ধুন্দুল। আপনারা চাইলে এ সময় ধুন্দুল চাষ করতে পারেন এটিও একটি লাভজনক ফসল। ধুন্দুল সব ধরনের মাটিতে চাষ করা যায়, তবে দোআঁশ মাটিতে চাষ করলেই ভালো ফলন পাওয়া যায়। প্রতি শতক জমিতে ১০ থেকে ১২ গ্রাম বীজের প্রয়োজন পড়ে। ধুন্দলের বীজগুলো লাগিয়ে দেওয়ার আগে ১৪ থেকে ১৬ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। 

আমাদের দেশে সাধারণত দুই জাতের ধুন্দুল চাষ করা হয়। একটি দেশী এবং একটি হাইব্রিড জাতের ধুন্দুল চাষ করা হয়। দেশি জাতীয় ধুন্দুল আকারে একটু ছোট হয়, এবং হাইব্রিড জাতের ধুন্দুল অনেক বড় হয়। হাইব্রিড জাতের ধুন্দুল চাষ করলে ৪৫ দিনের মধ্যেই ফলন পাওয়া যায়।

চিচিঙ্গাঃ বর্ষাকাল চিচিঙ্গা লাগানোর সিজন ,কিন্তু চিচিঙ্গা সারা বছর চাষ করা যায়। চিচিঙ্গা বর্ষাকালে সবজি বলা হয় কারণ এই সিজনে চিচিঙ্গার বাম্পার ফলন পাওয়া যায়। এজন্য মানুষ সারা বছর চিচিঙ্গা চাষ না করলে, বর্ষাকালে চাষ করে। সব ধরনের মাটিতেই চিচিঙ্গা চাষ করা যায়। জৈব সমৃদ্ধ দোআঁশ মাটিতে চিচিঙ্গা চাষ ভালো হয়। 

আপনারা এসব জাতের চিচিঙ্গা চাষ করতে পারেন। সুরমা রুপসা বাড়ি চিচিঙ্গা ১ তিসতা ইত্যাদি বীজ লাগিয়ে দেওয়ার আগে ১২ থেকে ১৫ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন। হাইব্রিড জাতের চিচিঙ্গা লাগানোর ৪৫ দিনের মধ্যেই ফলন পাওয়া যায়।

শসাঃ বর্ষাকালে উচ্চ জমিতে চাইলে শসা চাষ করতে পারে । মাচা দিয়ে চাষ করলে শসার ফলন বেশি পাওয়া যায়। উঁচু জমিতে শসা চাষ করলে শেষের প্রয়োজন পড়ে না। শসা গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায় আর প্রচুর পরিমাণ ফলন পাওয়া যায়। আমাদের দেশে বেশ কিছু হাইব্রিড জাতের শসার বীজ আছে যা লাগানোর ৩৫ দিনের মধ্যেই ফলন দেয়।

ঝিঙ্গাঃ আরো একটি বর্ষাকালীন সবজি হলো ঝিঙ্গা যদিও ঝিঙ্গা সব ধরনের মাটিতে চাষ করা যায়। কিন্তু বেলে দোআঁশ মাটিতে চাষ করলেন বাম্পার ফলন করা যায়। প্রতি শতাংশ মাটিতে ১০ থেকে ১২ গ্রাম বীজ প্রয়োজন পড়ে। ঝিঙ্গা বীজগুলো লাগিয়ে দেওয়ার আগে ১৮ থেকে ২০ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। আমাদের দেশের প্রায় সব জায়গায় ঝিঙ্গা চাষ করা হয়। 

সঠিক পদ্ধতিতে ঝিঙ্গা চাষ করলে বাম্পার ফলন পাওয়া যায়। আমাদের দেশে বর্তমানে দুই ধরনের ঝিঙ্গা চাষ করা হয়। একটি দেশি একটি হাইব্রিড জাতের ঝিঙ্গা চাষ করা হয়, ঝিঙ্গা বীজ লাগিয়ে দেওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যেই ঝিঙ্গার ফলন পাওয়া যায়।

লাউঃ আমরা কম বেশি সবাই লাউ খেতে পছন্দ করি, বর্ষাকালের শেষেই আগাম লাউ চাষ করতে পারেন এতে বাম্পার ফলন পাওয়া যায়, আপনারা দোআঁশ থেকে বেলে দোআঁশ মাটিতে লাউ চাষ করার চেষ্টা করবেন, এতে ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। 

লাভ ইসগুলো লাউ বীজগুলো লাগিয়ে দেওয়ার ২৪ ঘন্টা আজকে পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন এতে চারা তাড়াতাড়ি গজাবে। বাড়ি বাও ১ বাড়ি বাও ২, বাড়ি বাও ৩, বাড়ি বাও ৪ সারা বছর চাষ করতে পারেন, অবশ্যই বর্ষাকালে চাষ করতে পারেন।

এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি চাষ করতে পারেন যেমন লাল শাক, সবুজ শাক, কলমি শাক, পালং শাক, পুঁইশাক, ডাটা শাক ইত্যাদি। এই সবগুলোর বর্ষাকালের চাহিদা খুব বেশি ,এই শাক গুলো চাষ করলে বাম্পার ফলন পাবেন এবং লাভবান হবেন।

বর্ষাকালে কোন সবজি চাষ ভালো হয়

বর্ষাকালে রাসানিক মুক্ত সবজি চাষ করার সহজ পদ্ধতি হলো, বর্ষাকালে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করা হয়। পুঁইশাক, লাল শাক, কলমি শাক ইত্যাদি চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায় এ সময় বেগুন চাষ করলে বাম্পার ফলন পাওয়া যায়। বেগুন চাষের জন্য দোআঁশ থেকে বেলে দোআঁশ মাটিতে চাষ করার জন্য উপযোগী। বেগুন চাষ করার জন্য ভালো জাতের বেগুন জাত নির্বাচন করতে হবে।



বেগুনের বীজগুলো ১০ থেকে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে তারপরে চারা তৈরি করতে হবে। গাছগুলো লাগিয়ে গাছের গোড়া উঁচু করে দিতে হবে যাতে পানি জমতে না পারে। গাছের গোড়ায় জৈব সার ব্যবহার করলে তাড়াতাড়ি গাছ বৃদ্ধি পাবে। দুই ধরনের বেগুন চাষ করা হয় । 


একটি হলো দেশি আরেকটি হলো হাইব্রিড দেশি বেগুন আকারে ছোট ও খেতে অনেক মজা। হাইব্রিড বেগুন গুলো উচ্চ ফলনশীল যা লাগানোর ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যেই ফলন পাওয়া যায়।

বরবটিঃ বর্ষাকালে সবচেয়ে বেশি ফলন পাওয়া যায় বরবটিতে। এইজন্য এ সময় বরবটি চাষের উপযোগী সময়। বরবটি খুবই স্বল্পমেয়াদী ফসল, বীজ বপনের পর ফসল ধরতে সময় লাগে মাএ ৩০ দিন। এবং বিভিন্ন জাতের বরবটি রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কেকন নাইটি, এরনা, চিনা বরবটি, লাল বেনি, ঘৃতকুমারী, গ্রীন লং, তোকি, বনলতা ইত্যাদি। দোআঁশ থেকে বেলে দোআঁশ মাটিতে বরবটির চাষ করলে ফলন ভালো হয়। 

বরবটি চাষ করার আগে অবশ্যই জমি ভালোভাবে চাষ করে নিতে হবে। প্রতি শতকের ১০০ থেকে ১২৫ গ্রাম বীজ প্রয়োজন পড়ে। চারা যখনই একটু বড় হবে তখনই মাচা বাউনি টা দিয়ে দিবেন। জমিতে যেন পানির অভাব না হয় এজন্য সেচের ব্যবস্থা করে দিবে। সব সময় আগাছা পরিষ্কার রাখবেন। পোকামাকড় রোগ ব্যাধি থেকে মুক্ত রাখতে কোটা জাত করতে পারেন, 

আবার বাশ আগা নিয়ে জমির মাঝ খানে মাঝ খানে পুতে দিলে পাখিরা এসে পোকামাকড় খেতে পারবে, এতে সবজি পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা পাবে।এতে রাসায়নিক মুক্ত সবজি চাষ হবে, ফলন বৃদ্ধি পাবে।

মিষ্টি কুমড়াঃ বর্ষাকালীন সবজির মধ্যে মিষ্টি কুমড়া অন্যতম একটি সবজি। আপনারা চাইলে এ সময় মিষ্টি কুমড়া চাষ করতে পারেন। চর অঞ্চলের পলি মাটিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ ভালো হয়। জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ দোআঁশ মাটি বা এটেল দোআঁশ মাটি কুমড়া চাষের জন্য উত্তম। প্রতি শতাংশ প্রতি ৩ গ্রাম বীজ লাগে। বাড়ির মিষ্টি কুমড়া ১ বাড়ির মিষ্টি কুমড়া ২ সুইট বল ইয়েলো 

পাত জাতের মিষ্টি কুমড়া চাষ করতে পারে। মিষ্টি কুমড়ার বীজ লাগিয়ে দেওয়ার আগে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন। ভাল জাতের মিষ্টি কুমড়া লাগালে ভালোভাবে পরিচর্যা করলে ৫০ দিনের মধ্যেই ফলন পাওয়া যায়।

খুব অল্প জায়গায় চাষের ১০টি বর্ষাকালের সবজির নামসমূহ

  • লাল শাক ও সবুজ শাক
  • ঢেঁড়স বা ভেন্ডিলাল 
  • বেগুন
  • লাউ
  • মরিচ
  • চিচিঙ্গা
  • পেঁপে
  • বরবটি
  • করলা
  • শসা

জুন মাসে কি কি সবজি চাষ করা যায় তার পদ্ধতি জানুন

জুন মাস থেকে বর্ষাকাল শুরু হয়, তাই জুন মাসকে বলা হয় বর্ষার মাস। আর আমরা সবাই জানি যে বর্ষাকালে কোন ফসল চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। আর বেশিরভাগ ফসল বর্ষাকাল বা জুন মাসে চাষ করা হয়ে থাকে। আর এই জুন মাসের আবহাওয়া ও মাটি চাষের জন্য খুবই উপযুক্ত। যার কারণে জুন মাসে ফসল চাষ করলে ফসলের ফলন ভালো হয়। তাই দেখা যায় অন্যান্য সময়ে এর থেকেও কৃষক ভাইরা এই বর্ষাকালে বা জুন মাসে ফসল চাষের বেশি ব্যস্ত থাকে। 

আসুন জেনে নেওয়া যাক জুন মাসে কি কি সবজি চাষ করে ভালো লাভ করা যায় সেই সম্পর্কে। কুমড়া চাষ, জুন মাসে আপনি চাল কুমড়া চাষ করতে পারেন। তবে আগে ভালো জাত নির্বাচন করে নিবেন ,তাহলে বর্ষাকালে ভালো ফলন পাবেন। ঝিঙে চাষ, জুন মাসে বর্ষাকাল থাকায় পানির অভাব হয় না তাই এই সময় ঝিঙে চাষে ভালো ফলন পাওয়া যায়। 

তাই জুন মাসে চাষ করার জন্য উপযুক্ত সবজি হলো ঝিঙে। করলা চাষ, করলা বিভিন্ন রোগের হাত থেকে আমাদের শরীরে রক্ষা করে, এর জন্য বাজারে এর চাহিদাও অনেক করলা সারা বছর চাষ করা গেলে এখনই উপযুক্ত সময়। এ সময় লম্বা করলার ফলন বেশ ভালো হয় তাই ভালো জাতের করলা নির্বাচন জরুরী। সজনে চাষ, সজনী ডাটা কান্ড রোপনের উপযুক্ত সময় 

জুন মাস কান্ডের রোপনের পূর্বে গর্ত করে গর্তের ভিতর ছাই গোবর সার ও সামান্য পানি দিয়ে নিতে হবে। এবার সেই উপযুক্ত কান্ডটি এ গর্তের মধ্যে প্রবেশ করি মাটি দিয়ে আটকে দিতে হবে। পেঁপে চাষ, কাঁচা পেঁপে সবজি হিসেবে বর্তমানে চাহিদার শীর্ষে। কাঁচা পেঁপে শরীরের জন্য বেশ উপকারী তাই জুন মাসে পেঁপের চারা রোপন করে দিন। 

লাউ চাষ, লাউ চাষের জন্য আগে মাচা তৈরি করে নিন, বীজ রোপন করে দিন সঠিক পরিচর্যা করলে লাভবান হবেন। লালশাক চাষ, জুন মাসে লাল শাকের বীজ রোপন করলে পানি দেওয়া নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। লাল শাক সবারই পছন্দ, বাড়ির আগিনা বা ছাদ বাগানে চাষ করতে পারেন। 

পুঁইশাক চাষ, পুইশাকের বীজ অথবা ডাটা মাটিতে লাগিয়ে দিলে গাছ হয়ে যাবে, দেরি না করে জুন মাসে লাগিয়ে দিন। এই সবজিগুলোর পাশাপাশি আপনারা কাকরোল, ধুন্দুল, ঢেঁড়স, বরবটি, কাঁচামরিচ, আদা, ধনে পাতা ইত্যাদি আপনারা চাষ করে লাভবান হতে পারে।

বর্ষাকালে কোন সবজি খাওয়া ভালো

আমরা প্রতিনিয়ত সবজি খাই না কিন্তু সবজির উপকারিতা বলতে জানিনা আসুন জেনে নেওয়া যাক ,বর্ষাকালে রাসায়নিক মুক্ত সবজি চাষের সহজ পদ্ধতি সবজিতে রয়েছে নানা ধরনের ভিটামিন মিনারেল ক্যালসিয়াম কিন্তু আমরা এগুলো সঠিকভাবে শরীরে যায় না, কারণ সবজি চাষ করে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক সার ওষুধ দিয়ে এজন্যই পুষ্টি গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায় এইজন্য নিজেরা রাসায়নিক মুক্ত সবজি চাষ করে সহজে খেতে পারেন , এতে শরীরের চাহিদা পূরণ হবে,



করলাঃ যদিও সারা বছর চাষ হয়, তবুও বর্ষাকালে করলা চাষের উপযোগী সময়, প্রতি শতক জমিতে ২৫ গ্রাম বীজের প্রয়োজন পড়ে। বীজ লাগিয়ে দেওয়ার আগে ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। করলা চাষ করার জন্য একমাথা থেকে আরেক মাথার দূরত্ব রাখবেন দেড় মিটার। প্রতিটি মাথার মধ্যে দুটি করে চারা রাখবে। বাংলাদেশে বেশ কিছু উচ্চ ফলনশীল করলার জাত রয়েছে। বাড়ি করলা ১, বিএনসিটি বস করলা উল্লেখযোগ্য। 

আরো কিছু হাইব্রিড জাতের করলার আছে এগুলো আপনারা চাষ করতে পারেন বুলবুলি টিয়ার কাক ৮৮ মিনিস্টার গৌরব গ্রীন রকেট হীরা মানিক প্যারট ইত্যাদি হাইব্রিড করলার জাত সমূহ। আবার খেয়াল রাখতে হবে গাছের গোড়ায় যেন পানি জমে না থাকে। নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করতে হবে, পোকামাকড় রোগব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে আগের নিয়মটা ফলো করতে পারে এতে করলা বিক্রি করে লাভবান হওয়া সম্ভব।

সজনী ডাটা কান্ড রোপনের উপযুক্ত সময় জুন মাস কান্ডের রোপনের পূর্বে গর্ত করে গর্তের ভিতর ছাই গোবর সার ও সামান্য পানি দিয়ে নিতে হবে। এবার সেই উপযুক্ত কান্ডটি এ গর্তের মধ্যে প্রবেশ করি মাটি দিয়ে আটকে দিতে হবে। পেঁপে চাষ, কাঁচা পেঁপে সবজি হিসেবে বর্তমানে চাহিদার শীর্ষে। কাঁচা পেঁপে শরীরের জন্য বেশ উপকারী তাই জুন মাসে পেঁপের চারা রোপন করে দিন। 

লাউ চাষ, লাউ চাষের জন্য আগে মাচা তৈরি করে নিন, বীজ রোপন করে দিন সঠিক পরিচর্যা করলে লাভবান হবেন। লালশাক চাষ, জুন মাসে লাল শাকের বীজ রোপন করলে পানি দেওয়া নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। লাল শাক সবারই পছন্দ, বাড়ির আগিনা বা ছাদ বাগানে চাষ করতে পারেন। পুঁইশাক চাষ, পুইশাকের বীজ অথবা ডাটা মাটিতে লাগিয়ে দিলে গাছ হয়ে যাবে,

মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষ করার উপায়

বর্ষাকালে রাসায়নিক মুক্ত সবজি চাষের সহজ পদ্ধতি হলো ,খুব সহজে অল্প জায়গায় অল্প সময়ে মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষ করা যায়। বেগুন, মরিচ, পুঁইশাক ,পটল, বরবটি, সিম, ধুন্দল, ঝিঙ্গে ইত্যাদি সবজিগুলো চাষ করা যায়। মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষ করলে বাম্পার ফলন পাওয়া যায় এবং শরীরে পুষ্টিগুলো বজায় থাকে। এভাবে বর্ষাকালে সবজি চাষ করা ভালো।

খুব সহজে অল্প জায়গায় ছাদের টপে সবজি চাষ করার উপায়

আমরা কাজের ক্ষেত্রে কম বেশি অনেকেই শহরে বসবাস করি এই জন্য আমরা রাসায়নিক মুক্ত সবজি খেতে পারি না । আর টাটকা সবজি তো চোখেই পড়ে না। এইজন্য অল্প জায়গায় ছাদে টপে ফোন ধরণের বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে শরীরে সুষম পুষ্টি গুণের চাহিদা ও পারিবারিক চাহিদা পূরণ করা যায়।ছাদ বাগানে চাষ করতে পারেন। 

পুঁইশাক চাষ, পুইশাকের বীজ অথবা ডাটা মাটিতে লাগিয়ে দিলে গাছ হয়ে যাবে, দেরি না করে জুন মাসে লাগিয়ে দিন। এই সবজিগুলোর পাশাপাশি আপনারা কাকরোল, ধুন্দুল, ঢেঁড়স, বরবটি, কাঁচামরিচ, আদা, ধনে পাতা ইত্যাদি আপনারা চাষ করে লাভবান হতে পারে।

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য: বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। বর্ষাকালে কোন সবজি চাষ করা ভালো বা কিভাবে চাষ করতে হবে, কিন্তু আমরা রাসায়নিক মুক্ত সবজি চাষের পদ্ধতি অনেকে জানি না, তাদের জন্য এই আর্টিকেলটি আশা করি এটা পড়ে আপনারাও উপকৃত হবে। আরো কি বিষয় আর্টিকেল চান কমেন্টে জানাতে পারেন। আমরা চেষ্টা করব এমন তথ্যমূলক পোস্ট করার, শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url