অল্প সময়ে বর্ষাকালে মাছ চাষের সফলতা ও কৌশল

মাছ চাষ করা কথা মনে আসলেই আমরা অনেক ভাবি অনেক টাকা লাগবে জায়গা লাগবে এবং অনেক সময় দিতে হবে, এজন্য অনেকের মাছ চাষ করার ইচ্ছে থাকলেও করতে পারে না। কিন্তু না অল্প সময়ে বর্ষাকালী মাছ চাষের সফলতা করতে চাইলে আর্টিকেল কি আপনার জন্য কম খরচে মাছ চাষ করে ভালো ফলন পাওয়া যায়।



বর্ষাকালে অল্প সময়ে মাছ চাষ করতে হলে প্রধান উপকরণ হলো ভালো জাতের মাছের নির্বাচন করতে হবে। এবং মাছ চাষের জন্য উপযোগী পানি প্রস্তুত করতে হবে ।

পেজ সূচিপত্র :অল্প সময়ে বর্ষাকালে মাছ চাষের সফলতা ও কৌশল গুলো হলো

বর্ষাকালে অল্প সময় মাছ চাষের পদ্ধতি হলো মাছ চাষে ভালো ফলন পেতে হলে ভালো জাতের মাছের পোনা নির্বাচন করতে হবে।পুকুরের পাড় উঁচু করে দিতে হবে। এবং পানি ভালোভাবে প্রস্তুত করতে হবে, যাতে পানির ভিতর অক্সিজেন প্রবেশ করতে পারে । এতে মাছ শ্বাস নিতে পারবে রোগব্যাধি কম হবে। সঠিক পরিমাণ খাবার দিতে হবে মাছকে।বেশি পরিমাণ হাইড্রোজেন পানিতে বেড়ে গেলে মাছ মারা যাবে না।সঠিক নিয়ম অবলম্বন করলে মাছ চাষে অল্প সময়ে বাম্পার ফলন পেতে পারবেন।

মাছ চাষের সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি কোনটি

অল্প সময়ে বর্ষাকালে মাছ চাষের সফলতা ও কৌশল হলো, পুকুর ব্যবস্থা কারণ মাছ চাষের জন্য বেশি জায়গা বা পানির প্রয়োজন হয়।মাছ চাষের সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি এটি সবচেয়ে উপকারী মাছ চাষের কৌশল গুলোর মধ্যে একটি কারণ মাছের বর্জ্য ধারণকারী পানি কৃষি ক্ষেত্রে সার ব্যবহার করা হয়।মাছ চাষ করার জন্য আদর্শ পুকুর নির্বাচন করতে হবে।পুকুরের পাড় উঁচু করে বাত দিতে হবে,অবশ্যই মাছ চাষ করার জন্য পুকুরের গভীরতা থাকতে হবে।পুকুর প্রস্তুত করার জন্য চুন ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও পুকুরে যেন আলোর বাতাস আশার সুব্যবস্থা থাকতে হবে।

এছাড়াও পুকুরে যেন কোন ক্ষতি করার রাক্ষসী মাছ না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে, রাক্ষসী মাছগুলো মেরে ফেলে পুকুর শুকিয়ে নতুন ভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে, পুকুরে প্রাকৃতিক খাবার থাকতে হবে। অবশ্যই পুকুরে জল নিষ্কাশন ব্যবস্থা থাকতে হবে,নষ্ট হলে পানি বের করতে হবে। এতে পানির পরিমাণ কমে গেলে কিংবা মাছগুলো বড় হলে যেন পরবর্তীতে আবার পানি দেওয়া যায়।পুকুর পাড়ে বড় গাছ লাগানো যাবে না। 

পুকুরে অতিরিক্ত কাদা থাকলে তা উঠিয়ে ফেলতে হবে ,৫ থেকে ৬ ইঞ্চি কাদা থাকলে মাছ চাষ ভালো হয়। পুকুর দুই থেকে তিন দিন শুকাতে রাখতে হবে, পুকুরে অবশ্যই ভালো চুল ব্যবহার করতে হবে, গুড়া চুন বা পাউডার চুন ব্যবহার না করাই ভালো। পুকুরের পাথরের চুল ব্যবহার করতে হবে । পুরো চুল ছড়িয়ে দিয়ে ১দিন রাখতে হবে, তারপরে পরিষ্কার পানি দিতে হবে, ১ থেকে দেড় ফিট পানি দিয়ে সার প্রয়োগ করতে হবে ইউরিয়া বা 

এসএস পি প্রতি শতকের ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম ব্যবহার করতে পারে।পুকুরে খোল ব্যবহার করলে একটা হিট আসে। এতে মাছের বৃদ্ধি বেশি হবে।পুকুরে খোল ব্যবহারের ফলে পুকুরের গ্যাস হবে, প্রতি এক শতকে এক কেজি খোল ব্যবহার করতে হবে।সাত দিন অপেক্ষা করতে হবে তারপরে কুকুরের পানি সবুজ হয়ে যাবে। পুকুর এখন উপযোগী মাছ চাষ করার জন্য।এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করলে মাছে বাম্পার ফলন পাওয়া সম্ভব।

মাছ উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান কত তম

মাছ উৎপাদনে শীর্ষে দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ মাছ উৎপাদনে ৫ নাম্বারে আছে।কিন্তু বর্তমানে চাষিরা মাছ চাষ নিয়ে একটু ভয়ে আছে। কারণ মাছ নানা রোগ আক্রান্ত হচ্ছে।দিন দিন নতুন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মাছ।যথাসময়ে রোগ ধরতে না পারায় বিপাকে পড়ছে চাষিরা।এতে অনেক ক্ষতি হচ্ছে,বিশেষজ্ঞরা বলছে অতি ঘনত্ব চাষ করার ফলে রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি,


 
এতে মাছের উৎপাদন বাড়লেও রোগে আক্রান্ত বেড়ে যাচ্ছে।তাও মাছ চাষ করা কম নি, দিন দিন মাছ চাষ করা বৃদ্ধি পাচ্ছে এতে আমদানি ও রপ্তানি হচ্ছে।বাংলাদেশে সবচেয়ে চাহিদার মাছ হলো ইলিশ।বাংলাদেশি যেমন চাহিদা রয়েছে এই মাছের তেমনি বাহিরের দেশগুলোতে এর চাহিদা অনেক এটি রপ্তানি করে দেশে অর্থনৈতিক আয় হয়।

সবচেয়ে কম সময়ে কোন মাছ চাষের লাভ বেশি হয়

কম সময়ে যে মাছ চাষ করে লাভ বেশি হয় সেটি হলো তেলাপিয়া। এ মাছ চাষ করলে মাত্র তিন মাসেই ভালো ওজনের হয়ে যায়, এতে বাম্পার ফলন পাওয়া যায়।বছরে তিনবার চাষ করা যায় তেলাপিয়া মাছ। এজন্য তেলাপিয়া মাছের লাভ বেশি হয়,কারণ বাজারে প্রচুর পরিমাণ তেলাপিয়া মাছের চাহিদা রয়েছে ছোট থেকে বড় সবাই এই মাছটি খেতে পারে সবার সাধ্যের মধ্যেই এই মাছ পেয়ে যায়।এতে রয়েছে সর্বোচ্চ পুষ্টিগুণ সম্পন্ন 

এবং ভিটামিন ডি ও বি রয়েছে এই জন্য এই মাছের চাহিদা একটু বেশি। তাছাড়াও আরো একটি জাতের মাছ রয়েছে সিলভার কাপ, এটিও বাজারের অনেক চাহিদা রয়েছে। অল্প সময়ে এই মাছ চাষ করা যায়, বছরে তিনবার এই মাছ চাষ করা যায় সঠিক নিয়ম মাছ চাষ করলে ফলন ভালো পাওয়া যায়।সবচেয়ে কম সময়ে এই মাছগুলো চাষ করলে বেশি লাভবান হওয়া যায়।

পুকুরে মাছ চাষের পদ্ধতি গুলো কি কি

অল্প সময়ে বর্ষাকালে মাছ চাষের সফলতা ও কৌশল হলো আদর্শ পুকুর নির্বাচন করতে হবে।পুকুরের পাড় উঁচু করে বাত দিতে হবে,অবশ্যই মাছ চাষ করার জন্য পুকুরের গভীরতা থাকতে হবে।পুকুর প্রস্তুত করার জন্য চুন ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও পুকুরে যেন আলোর বাতাস আশার সুব্যবস্থা থাকতে হবে।এছাড়াও পুকুরে যেন কোন ক্ষতি করার রাক্ষসী মাছ না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে, রাক্ষসী মাছগুলো মেরে ফেলে পুকুর শুকিয়ে নতুন ভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে, 

পুকুরে প্রাকৃতিক খাবার থাকতে হবে। অবশ্যই পুকুরে জল নিষ্কাশন ব্যবস্থা থাকতে হবে,নষ্ট হলে পানি বের করতে হবে। এতে পানির পরিমাণ কমে গেলে কিংবা মাছগুলো বড় হলে যেন পরবর্তীতে আবার পানি দেওয়া যায়।পুকুর পাড়ে বড় গাছ লাগানো যাবে না পুকুরে অতিরিক্ত কাদা থাকলে তা উঠিয়ে ফেলতে হবে ,৫ থেকে ৬ ইঞ্চি কাদা থাকলে মাছ চাষ ভালো হয়। পুকুর দুই থেকে তিন দিন শুকাতে রাখতে হবে, পুকুরে অবশ্যই ভালো চুল ব্যবহার করতে হবে, 

গুড়া চুন বা পাউডার চুন ব্যবহার না করাই ভালো। পুকুরের পাথরের চুল ব্যবহার করতে হবে । পুরো চুল ছড়িয়ে দিয়ে ১দিন রাখতে হবে, তারপরে পরিষ্কার পানি দিতে হবে, ১ থেকে দেড় ফিট পানি দিয়ে সার প্রয়োগ করতে হবে ইউরিয়া বা এসএস পি প্রতি শতকের ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম ব্যবহার করতে পারে।পুকুরে খোল ব্যবহার করলে একটা হিট আসে। এতে মাছের বৃদ্ধি বেশি হবে।

পোনা মাছের চাষ পদ্ধতি কি কি

পোনা মাছ চাষ করার জন্য প্রথমে পুকুর প্রস্তুত করতে হবে পুকুরের পরিচর্যা করা পুকুরের পাড় মেরামত করা,পুকুরের পাশে বড় গাছের ডাল কাটা,পুকুরের তলদেশ সমান করা, ১২ দিনের মত সময় লাগবে রেনু পোনা উৎপাদন করতে হবে।তারপরে পোনাগুলো পুকুরে ছাড়তে হবে অবশ্যই এদিকে খেয়াল রাখতে হবে, 

প্রাকৃতিক খাদ্য-কনা জন্মানো নির্দিষ্ট সংখ্যার মাছ ছাড়া মাছের ও পানির নিয়মিত যত্ন নিতে হবে ।পুকুরে যেন রাক্ষসী মাছ বা বড় মাছ না থাকে এতে পোনা মাছ গুলোকে খেয়ে নিবে ।পোনা মাছগুলোকে নিয়মিত খেতে দিতে হবে, দিনে তিন থেকে চারবার খেতে দিলে পোনা মাছগুলো তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পাবে ।প্রতি লাখ মাছের পোনার জন্য ৬০০ গ্রাম গুড়া বা খোল মিক্স করে দিতে হবে। 



এদিকেও খেয়াল রাখতে হবে যে খাবার গুলো খাচ্ছে কিনা।১৫ দিনের মধ্যেই ধানিপুনা হয়ে যাবে ,তারপর ওই পোনা গুলো অন্য পুকুরে সিপ করে আগের নিয়মে চাষ করতে হবে।৪০ দিনের মধ্যেই মাছ চাষ হয়ে যায় বাজারে পোনা মাছের চাহিদা অনেক, এভাবে চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায় ।

মাছ চাষে প্রাকৃতিক খাদ্য যথেষ্ট নয় কেন

অল্প সময়ে বর্ষাকালে মাছ চাষে সফলতা হলো প্রাকৃতিক খাদ্য মাছের গুরুত্ব মাছের দ্রুত বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক ভাবে লাভজনক উপাদান পাওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। মাছ চাষের ক্ষেত্রে অধিক উপাদান পাওয়ার জন্য পুকুরে অধিক ঘনত্ব পোনা ছাড়া হয়, এজন্য প্রাকৃতিক খাবার মাছের জন্য যথেষ্ট নয়। এতে মাছের বৃদ্ধি কম হয়, এবং বিভিন্ন রোগ বালাই দেখা দেয়। এবং বিভিন্ন সার প্রয়োগ করবে প্রাকৃতিক খাদ্য বৃদ্ধি করলেও তা যথেষ্ট হয় না মাছের জন্য।
মাছ চাষের প্রাকৃতিক খাদ্য যথেষ্ট নয় কারণ হলো
  • মাছের ঘনত্ব বৃদ্ধির সাথে সাথে খাদ্যের অভাব তীব্র হয়, এই জন্য প্রাকৃতিক খাদ্য মাছের জন্য যথেষ্ট নয়।
  • প্রাকৃতিক খাদ্য সব সময় সব পুষ্টির উপাদান সরবরাহ করে না এতে মাছ পুষ্টিহীনতায় ভুগে।
  • প্রাকৃতিক খাদ্যের পরিমাণ ঋতু এবং আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে।
  • পরিবেশগত সমস্যার কারণে মাছ উৎপাদনকে মুখে ফেলে।
  • অতিরিক্ত মাছের ঘনত্ব জলের গুণমানকে নষ্ট করে।
  • প্রাকৃতিক খাদ্যের পরিমাণ সীমিত এর কোন বৃদ্ধি নেই।
  • পুষ্টির অভাবে মাছের বৃদ্ধির এবং প্রজননকে বাধাগ্রস্ত করে।
  • মাছের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য অতিরিক্ত পুষ্টি খাদ্যের প্রয়োজন।
  • অপর্যাপ্ত খাদ্য মাছের বর্জ্য বৃদ্ধি করে।
  • খাদ্যের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পায়।

মাছ চাষের প্রাচীনতম ধরন কোনটি

প্রাচীনকালে মানুষ মাছ চাষের বিষয়ে জানতো না কারন তখন নদী নালা খাল বিলে প্রচুর মাছ পাওয়া যেতো। তারা বিভিন্ন পদ্ধতিতে মাছ ধরতো।এবং বিক্রি করতো অনেকে আছে বাড়ির ছোট পুকুরে কিছু পোনা নিয়ে নানা ধরনের মাছ ছাড়েন।এবং কোন পরিচর্যা করেন না। এতে যা মাছ উৎপাদন হতো তা দিয়ে পরিবারের চাহিদা মিটতো। প্রাচীনকালের মানুষ মাছ চাষ করত।

মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের শীর্ষ জেলা কোনটি

মাছ উৎপাদনে দেশ সেরা হলো ময়মনসিংহ ও যশোর এই দুই জেলায় প্রচুর পরিমাণ মাছ চাষ করা হয়।অল্প সময়ে বর্ষাকালে মাছ চাষের সফলতা আসে। ময়মনসিংও যশোর এসব জেলায় বর্ষাকালে প্রচুর মাছ চাষ করা যায়, চারদিকে শুধু পানি আর পানি এইজন্য মাছ চাষ করা সুবিধা হয়। ইলিশ মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের এক নম্বর অবস্থানে রয়েছে। 

খাল বিল ও নদী বেষ্টিত পাঁচ উপজেলার মৎস্য চাষ করে মুক্ত জলাশযে মাছ উপাদানে বাংলাদেশের তৃতীয়। প্রায় বিশ্বের সব দেশে মাছের চাহিদা প্রচুর এজন্য অনেক জেলায় মাছ চাষে জোর দিয়েছে। ভালোভাবে পরিচর্যা করলে মাছে বাম্পার ফলন পাওয়া যায়। কারণ বাঙালির মাছ ছাড়া চলে না, এই জন্যই বাঙালি মাছের ভাতে বাঙালি বলা হয়।

মন্তব্যঃ আমরা সবাই জানি বর্ষাকালে মাছের উৎপাদন বেশি হয়, কিন্তু বেশি হলেও এর চাহিদা কখনো কমে না। আশা করি অল্প সময়ই বর্ষাকালে মাছ চাষে সফলতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন, কিভাবে চাষ করতে হয়, এবং কোন মাছ কিভাবে কখন চাষ করতে হয়। কোন মাছ কি পুষ্টি রয়েছেঅ সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আশা করি আপনার উপকারে আসবে, ধন্যবাদ শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url