মুখে অতিরিক্ত ব্রণ ও মেছতা কেন হয় বিস্তারিত জানুন
প্রতিটা মেয়েই জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে মুখে অতিরিক্ত ব্রণ ও মেছতার সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। মুখের এই ব্রণ ও মেছতার সমস্যার জন্য অনেকেই দুশ্চিন্তায় ভুগে থাকে। অনেকেই আবার বিভিন্ন চর্ম বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। তাই আজকে আমরা জানবো মুখে অতিরিক্ত ব্রণ ও মেছতা কেন হয়।
আজকে আমরা অতিরিক্ত ব্রণ ও মেছতার সমস্যা নিয়ে আলোচনা করব। সম্পূর্ণ বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকার শেষ পর্যন্ত পড়বেন। আশা করি আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা উপকৃত হবেন।
সূচিপত্র
প্রত্যেকটা মেয়েই জীবনের কোনো না কোন বয়সে মুখে অতিরিক্ত ব্রণ ও মেছতা সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। মুখে ব্রণ বা মেছতা হয়নি এমন মেয়ে খুঁজে পাওয়া যাবেনা। মুখে অতিরিক্ত ব্রণ ও মেছতা কম বেশি সবার মুখেই হয়ে থাকে। তবে ব্রণ ও মেছতা হওয়ার প্রধান কারণ হলো তৈলাক্ত ত্বক। যাদের ত্বকে অতিরিক্ত তেল উঠে তাদের মুখে খুব সহজেই অতিরিক্ত ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণের জীবাণু খুব সহজেই বংশবিস্তার করতে পারে। যার ফলে মুখে অতিরিক্ত ব্রণ উঠে। ব্রণের পাশাপাশি মুখে মেছতাও হয়। ব্রণের সমস্যা শুধুমাত্র মেয়েদেরই হয় না ছেলেদেরও হয়।
মেয়েরা যেমন ব্রণের সমস্যায় ভোগে ঠিক তেমনি ছেলেরাও মুখে অতিরিক্ত ব্রণের সমস্যায় ভোগে। আর ছেলে-মেয়ে উভয়েরই ব্রণ ও মেছতা সমস্যার মূল কারণ হলো অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বক। ব্রণ ও মেছতা সমস্যার জন্য অনেকেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যান। ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে হাজার হাজার টাকার মেডিসিন ব্যবহার করেন। তারপরেও ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি মেলেনা। তাই আজকে আমরা জানবো মুখে অতিরিক্ত ব্রণ ও মেছতা হওয়ার কারণ।
কোন সমস্যা সম্পর্কে আগে থেকেই জানা থাকলে সেটা হওয়া থেকে খুব সহজেই আমরা প্রতিরোধ করতে পারব। তাই আমরা যদি জানি অতিরিক্ত ব্রণ ও মেছতা কেন হয় তাহলে আমরা সহজেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারবো। নিচে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট আকারে ব্রণ ও মেছতা হওয়ার কারণ বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।
অতিরিক্ত সূর্যের তাপের কারণে
আমাদের দৈনন্দিন কাজের জন্য সবাইকেই ঘরের বাইরে যেতে হয়। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও বিভিন্ন কাজের জন্য ঘরের বাইরে দীর্ঘ সময় থাকেন। আর এই ঘরের বাইরে যাওয়ার ফলে সূর্যের তাপ সরাসরি আমাদের মুখের উপরে পড়ে। সূর্যের এই তীব্র তাপের ফলে আমাদের মুখের অনেক ক্ষতি হয়। আমাদের স্কিন অত্যন্ত সংবেদনশীল। যার ফলে সূর্যের এই তীব্র তাপ দীর্ঘ সময় ধরে মুখের উপরে পড়ার ফলে আমাদের ত্বকের নিচে থাকা কোর্সগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার ফলস্বরূপ আমাদের মুখে অতিরিক্ত ব্রণ উঠে এবং ব্রণের পাশাপাশি মেছতার সমস্যা দেখা দেয়।
সূর্যের অতিরিক্ত তাপে আমাদের ত্বক পুড়েও যায়। ত্বক পুড়ে যাওয়ার ফলে সেখানে বিভিন্ন রকম রোগ জীবাণু বাসা বাধে। যার ফলে মুখে অতিরিক্ত ব্রণ উঠে। এছাড়াও অতিরিক্ত সূর্যের তাপে আমাদের মুখে প্রচুর পরিমাণে ঘাম হয়। আর এই ঘাম হবার ফলে আমাদের ত্বকে নানান রকম রোগ জীবাণুর আবির্ভাব ঘটে। যার ফলে আমাদের মুখে ব্রণ ও মেছতা সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাছাড়া সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি আমাদের ত্বকের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
সূর্যের এই অতিবেগুনি রশ্মিতে প্রাকৃতিক বিভিন্ন ক্ষতিকর এসিড থাকে। যা আমাদের ত্বকের অনেক ক্ষতি করে এবং আমাদের ত্বকে ব্রণ ও মেছতার সমস্যা সৃষ্টি করে। সূর্যের অতিরিক্ত তাপের ফলে আমাদের মুখে যে ব্রন গুলো জন্মায় সেগুলো খুব সহজেই সারানো যায় না। অনেক রকম মেডিসিন ব্যবহার করেও অনেক সময় এই ব্রণ থেকে রেহাই পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
চুলায় আগুনের তাপে রান্নাবান্না করার কারণে
প্রত্যেকটা মেয়েকেই কমবেশি রান্নাবান্না শিখতে হয় এবং প্রতিদিন রান্নাবান্না করতে হয়। এই রান্নাবান্না করার জন্য আমাদেরক দীর্ঘ সময় ধরে চুলার আগুনের তাপে থাকতে হয়। আগুনের তাপ আমাদের স্কিনের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। দীর্ঘসময় আগুনের তাপ আমাদের ত্বকে লাগলে ত্বকের কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ভেতর থেকে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। যার ফলে আমাদের মুখে ব্রণ উঠে। ব্রণের পাশাপাশি মেছতার সমস্যা দেখা দেয়। আগুনের তাপে এক ধরনের নাইট্রোক্সাইডের সৃষ্টি হয়। যেটা ত্বকে ব্রণ হওয়ার জন্য মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে।
আবার আগুনের তাপ ত্বকে লাগার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতাও নষ্ট হয়ে যায়। ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যাবার ফলে ত্বক মসৃণ হয়ে পড়ে। আর এই মসৃণ ও রুক্ষ ত্বকে খুব সহজেই ব্রণ ওঠে। এছাড়াও দিনের পর দিন আগুনের তাপে রান্নাবান্না করার ফলে ত্বকের নিচের কোষগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। যার ফলস্বরূপ আমাদের মুখে নানারকম ব্রণের জীবাণু বাসা বাঁধে এবং খুব সহজেই মুখে ব্রণ জন্ম নেয়। ব্রণ দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের মুখে থাকার ফলে নানা রকম কালচে দাগের সৃষ্টি হয়।
পরবর্তীতে সেই দাগ মেছতায় রূপ নেয়। তাছাড়া যাদের এলার্জির সমস্যা আছে তারা আগুনের তাপে রান্নাবান্না করার ফলে মুখ লাল হয়ে যায়। ত্বকের এই লালচে ভাবের জন্যও মুখে অতিরিক্ত ব্রণ হয়। আগুনের তাপে ধোয়ার সৃষ্টি হয়। এই ধোয়া আমাদের ত্বকের জন্য অনেক ক্ষতিকর।
আগুনের এই ধোঁয়ার মধ্যে বিভিন্ন রকম রোগ জীবাণু থাকে। যার ফলে আমরা যখন রান্নাবান্না করি তখন এই ধোঁয়া আমাদের মুখে লাগার ফলে আমাদের ত্বকে রোগ জীবাণু আক্রমণ করে। যার ফলস্বরূপ মুখে অতিরিক্ত ব্রণ উঠতে পারে।
মুখে অতিরিক্ত তেল ওঠার কারণে
অধিকাংশ মানুষেরই ত্বক তৈলাক্ত হয়ে থাকে। অনেকের মুখে প্রচুর পরিমাণে তেল উঠে। মুখে অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব ব্রণ হওয়ার মুখ্য কারণ। যাদের মুখ তৈলাক্ত তাদের মুখে ব্রণ বেশি বেশি জন্মায়। মুখে অতিরিক্ত তেল ওঠার ফলে ব্রণের জীবাণু মুখে সহজেই বাসা বাঁধতে পারে এবং খুব দ্রুত পুরো মুখে বংশবিস্তার করতে পারে। মুখে তেল ওঠার ফলে ধুলোবালি সহজেই আমাদের ত্বকের সাথে লেগে যেতে পারে। যার ফলে আমাদের মুখে সহজেই অতিরিক্ত ব্রণের সমস্যার সৃষ্টি হয়।
তাছাড়া আমাদের ত্বকে অতিরিক্ত তেল উঠলে ত্বক সবসময় ভেজা ভেজা থাকে। যার ফলে ভেজা স্থানে ব্রণের জীবাণু সহজেই বাসা বাঁধে এবং অতিরিক্ত ব্রণের জন্ম দেয়। তৈলাক্ত ত্বক মোটেও ভালো নয়। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা অতিরিক্ত ব্রণ ও মেছতার সমস্যায় সব থেকে বেশি ভুগে থাকেন। এছাড়াও তৈলাক্ত ত্বকে দুই একটা ব্রণ থেকে থাকলে সেটা ত্বকের তৈলাক্ততার জন্য পুরো মুখে ছড়িয়ে পড়ে এবং অতিরিক্ত ব্রণের সৃষ্টি করে। যার ফলে পুরো মুখ ব্রণে ও মেছতায় ভরে যেতে পারে।
অতিরিক্ত টেনশন এবং দীর্ঘ রাত অবধি জেগে থাকার কারণে
আমরা সকলেই জানি অতিরিক্ত টেনশন আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। অতিরিক্ত টেনশন করলে আমাদের শরীরের নানা রকম ক্ষতি হয়ে থাকে। অতিরিক্ত টেনশন করলে আমাদের শরীরের পাশাপাশি ত্বকেরও নানা রকম ক্ষতি হয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো মুখে অতিরিক্ত ব্রণের সমস্যা। অতিরিক্ত টেনশনের ফলে আমাদের মুখে অতিরিক্ত ব্রণ উঠতে পারে। কারণ টেনশন আমাদের ত্বককে ক্ষতিগ্রস্ত করে। আর ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হলে খুব সহজেই সেখানে নানারকম রোগ জীবাণু বাসা বাঁধতে পারে। ঠিক তেমনি অতিরিক্ত টেনশনের ফলে ব্রণের জীবাণু আমাদের মুখের বাসা বাঁধে এবং অতিরিক্ত ব্রণ উঠতে সাহায্য করে।
ব্রণের পাশাপাশি মুখে মেছতার সমস্যাও সৃষ্টি করে। অতিরিক্ত টেনশনের ফলে শরীর ও ত্বক শুকিয়ে শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। যার ফল স্বরূপ আমাদের ত্বকের কোষগুলো নিস্তেজ হয়ে পড়ে। ত্বকের কোষগুলো নিস্তেজ হয়ে পড়ার কারণে মুখে অতিরিক্ত ব্রণ ও মেছতা দেখা দেয়। এছাড়াও টেনশনের পাশাপাশি দীর্ঘরাত পর্যন্ত জেগে থাকার ফলেও মুখে অতিরিক্ত ব্রণ উঠতে পারে। দীর্ঘ রাত জেগে থাকা আমাদের স্বাস্থ্য এবং ত্বক উভয়ের জন্যই অত্যন্ত ক্ষতিকর। গভীর রাত অবধি জেগে থাকার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা ধীরে ধীরে নষ্ট হতে থাকে। ত্বকের কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এভাবে বেশ কিছুদিন গভীর রাত অবধি জেগে থাকার ফলে ত্বকে অতিরিক্ত ব্রণ উঠতে পারে সেই সাথে মেছতাও দেখা দিতে পারে। অনেক রাত অব্দি জেগে থাকলে শরীরে ভিটামিন সি এর পরিমাণ দিন দিন কমে যায়। যার ফলে ত্বক নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারে। কারণ আমরা সবাই জানি ভিটামিন সি আমাদের ত্বককে ভালো রাখে। তাই শরীরের ভিটামিন সি এর পরিমাণ কমে গেলে ত্বকে নানা রকম সমস্যা দেখা দিবে। সেই সাথে আমাদের ত্বকে অতিরিক্ত ব্রণ ও মেছতাও হতে পারে।
শরীরে হরমোন ও পুষ্টির অভাবজনিত কারণে
মানব শরীরে বিভিন্ন হরমোন ও পুষ্টির অভাবজনিত কারণে মুখে ব্রণ ও মেছতা হয়ে থাকে।মেছতা ও ব্রণ ত্বকের এক ধরনের অসুখ। মানব শরীরে প্রজেস্টেরন ও ইস্ট্রোজেন হরমোন এর মাত্রা বেড়ে গেলে আমাদের গালে মেছতা দেখা দেয়। এছাড়াও থাইরয়েড অসুখ ও জন্মনিয়ন্ত্রণের ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলে মেছতা হতে পারে। আবার উচ্চ রক্তচাপ
সমস্যার ফলেও আমাদের মুখে অতিরিক্ত ব্রণ হতে পারে। তাছাড়াও শরীরে কর্টিরসল হরমোনের বৃদ্ধির ফলেও মুখে অতিরিক্ত ব্রণ জন্ম নেয়। আমাদের শরীরে ফ্যাটি হরমোনের অতিরিক্ত বৃদ্ধির ফলেও ব্রণ ও মেছতা হয়। শরীরে ভিটামিন সি এর পরিমাণ কমে গেলেও মুখে ব্রণ ও মেছতা দেখা দিতে পারে। আবার শরীরের নানা ধরনের ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলেও মুখে ব্রণ হতে পারে।
উপরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টের মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম কেন আমাদের মুখে অতিরিক্ত ব্রণ ও মেছতা হয়। এখন আমরা জানবো আমাদের মুখে অতিরিক্ত ব্রণ ও মেছতা হলে সেটা কিভাবে প্রতিরোধ করব ।
গালের মেছতা দূর করার ঔষধের নাম
গালের মেছতা দূর করার বিভিন্ন রকমের ঔষধ এখন বাজারে এসেছে। সেই ঔষধ গুলো সঠিক নিয়মের ব্যবহার করে আমরা মেছতা দূর করতে পারব। মেছতা দূর করার জনপ্রিয় একটি ক্রিমের নাম হল “Fruit of the Wokali Collagen Anti Spot Fairness Cream " এই ক্রিমটি কয়েকদিন ব্যবহার করলেই গালের মেছতার দাগ পুরোপুরিভাবে দূর হয়ে যাবে। এই ক্রিমের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। এটি সম্পূর্ণভাবে ক্লিনিক্যালি প্রমাণিত। এছাড়াও হাইড্রোকুইনন ক্রিম ব্যবহার করলেও মেছতার দাগ দূর হবে।মেছতা দূর করার আরো কয়েকটি ক্রিমের নাম হল:
- Melatrin Cream
- Betnovet-N Cream
- Melasma Cream
- Mela Care Cream
- Melanyc Cream
- Betavet-N Cream
- Hydroo 2% Cream
- Hydroquinone Cream
মেছতা দূর করার ফেসওয়াশের নামসমূহ
মেছতা দূর করার জনপ্রিয় কিছু ফেসওয়াশ বর্তমানে বাজারে এসেছে। সেগুলো নিয়মিত ব্যবহার করলে গালের মেছতা দূর হবে।মেছতা দূর করার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ফেসওয়াশের নাম হলো:
- 5% kumkumadi Skin Radiance Face Wash
- Aqualogica Glow Plus Face Wash
- Aloe Vera Face Wash With Aloe Vera & Asshogondha
- Matte Moist Clay Face Wash
- Pilk Creaming Foaming Face Wash
উপরের উল্লেখিত পাঁচটি ফেসওয়াশ সম্পূর্ণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত এবং ক্লিনিক্যালি প্রমাণিত। এই ফেসওয়াশগুলো সঠিক নিয়ম মেনে প্রতিদিন সকালবেলা ও রাতে ঘুমানোর পূর্বে ব্যবহার করলে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাবে। এই ফেসওয়াশগুলো নিয়মিত ব্যবহার করলে আপনার মুখে যত পুরাতন মেছতার দাগই থাক না কেন তা সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার হয়ে যাবে ।
ব্রণ দূর করার ক্রিমের নাম
ব্রণের সমস্যা দূর করার জন্য বাজারে বেশ কিছু জনপ্রিয় ক্রিম রয়েছে। যাদের মুখে অতিরিক্ত ব্রণ রয়েছে তারা বাজার থেকে এই ক্রিম গুলো কিনে ত্বকে ব্যবহার করলে ব্রণের সমস্যা দূর হবে। বাজারে পাওয়া যায় ব্রণ নিরাময়কারী এমন বেশ কিছু ক্রিমের নাম নিচে উল্লেখ করা হলো:
- লোভাক্লিয়ার একনি ক্রিম
- নোভাক্লিয়ার একনি ক্লিনজার
- নরমেকনে এন্টি- ব্যাকটেরিয়াল ক্লিনজিং ফেসিয়াল জেল
- নরমেকনে একনি স্পট ট্রিটমেন্ট
- ডার্মাডিক্স এন্টি- একনি সিরাম
- ওয়ান নাইট একনি প্যাঁচ
- শোনেটা অয়েন্টমেন্ট
- বেটামেনশন সি- এল
উপরে উল্লেখিত ক্রিমগুলো নিয়মিত আপনার ত্বকে ব্যবহার করলে অতিরিক্ত ব্রণের সমস্যা থেকে রেহাই মিলবে। আপনার মুখ থাকবে একদম ফ্রেশ। যত দিনের পুরাতন ব্রন হোক না কেন উপরের ক্রিমগুলো যদি আপনি প্রতিদিন রাতে ঘুমাবার পূর্বে মুখে মাখেন তাহলে অল্পদিনের মধ্যেই আপনার ব্রণের সমস্যা সম্পূর্ণভাবে দূর হয়ে যাবে ।তবে অবশ্যই মনে করে নিয়ম মত প্রতিদিন রাতে ক্রিমগুলো ব্যবহার করতে হবে। নিয়মিত ত্বকে ক্রিমগুলো ব্যবহার করলেই সর্বোত্তম ফলাফল পাবেন।
অতিরিক্ত ব্রণের সমস্যা দূর করার ফেসওয়াশের নামসমূহ
অধিকাংশ মানুষই মুখে অতিরিক্ত ব্রণের সমস্যায় ভুগে থাকেন। তবে ব্রণ নিয়ে এখন আর চিন্তার কিছু নেই। বাজারে ব্রণ দূর করার জন্য অনেক রকমের ফেসওয়াশ চলে এসেছে। সেই ফেসওয়াশগুলো নিয়মিত ব্যবহার করলেই আপনার ত্বকের ব্রণের সমস্যা দূর হবে। ব্রণের সমস্যায় কার্যকরী কয়েকটি ফেসওয়াশের নাম নিচে উল্লেখ করা হলো
- সিম্পল ডেইলি স্কিন ডিটক্স পিউরিফাইং ফেসিয়াল ওয়াশ
- পিয়ার্স আল্ট্রা মাইল্ড ফেসওয়াস ইন অয়েল ক্লিয়ার গ্লো
- ডার্মালজিকা ব্রেক আউট ক্লিয়ারিং ফর্মিং ওয়াশ
- ল্যাকমে ব্লাশ এন্ড গ্লো কিউবি ক্রাশ জেল ফেসওয়াশ
- পন্ডস পিম্পল ক্লিয়ার ফেসওয়াশ
- রাজকন্যা এক্টিভেটেড চারকোল ফেসিয়াল ওয়াশ
- পানাম কেয়ার ডেইলি ফ্রেশ ওয়াশ অ্যাপল সিডার ভিনেগার
- নিউট্রোজেনা ক্লিয়ার এন্ড ডিফেন্ড ফেসিয়াল ওয়াশ
উপরের উল্লেখিত ফেসওয়াশ গুলো দিয়ে প্রতিদিন সকাল ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মুখ ধুয়ে নিলে অতিরিক্ত ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। আপনার ত্বক হয়ে উঠবে ব্রণহীন। তবে গ্যাপ দিয়ে ব্যবহার করলে কাজ নাও করতে পারে। নিয়মিত ফেসওয়াশগুলো দিয়ে মুখ ধুইলে সর্বোত্তম ফলাফল পাওয়া যাবে। আর এই ফেসওয়াশ গুলোতে কোনরকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। ফেসওয়াশগুলো ক্লিনিক্যালি প্রমাণিত এবং ব্রণ নিরাময়ে অধিক কার্যকরী ।
মুখের অতিরিক্ত ব্রণ ও মেছতা দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি
মুখে ব্রণ ও মেছতা থাকলে সবার কাছেই অস্বস্তি লাগে। কম বেশি সবাই ব্রণ ও মেছতার সমস্যায় ভুগে থাকেন। অনেকেই ব্রণ এবং মেছতা সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য চর্ম বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যান। পরবর্তীতে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী হাজার হাজার টাকার মেডিসিন ব্যবহার করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় অনেকেরই মেডিসিন ব্যবহারে তেমন কোনো লাভ হয় না।
আবার দীর্ঘদিন ধরে এ সকল মেডিসিন ব্যবহার করার ফলে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আমাদের স্কিনের উপরে দেখা যায়। সেজন্য অনেকেই আবার মেডিসিন ব্যবহার করতে ভয় পান। তবে আর ভয় পেতে হবে না। আজকে আমরা জানবো ঘরোয়া উপায়ে ব্রণ ও মেছতা দূর করার জাদুকরি কিছু উপায়।
টক দই: ব্রণ ও মেছতা দূর করতে টক দইয়ের কোন বিকল্প নেই। টক দই ব্রণ ও মেছতা নিরাময়ে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। যাদের মুখে ব্রণ ও মেছতার সমস্যা রয়েছে তারা গোসলের আগে কিছুটা পরিমাণে টক দই পুরো মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। এরপর টক দই মুখে শুকিয়ে যাবার জন্য 10 থেকে 12 মিনিট অপেক্ষা করুন।
শুকিয়ে যাবার পরে ভালো কোন ফেসওয়াস দিয়ে পুরো মুখ ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এভাবে নিয়মিত কিছুদিন টক দই মুখে লাগালে আপনার অতিরিক্ত ব্রণ ও মেছতার সমস্যা দূর হয়ে যাবে এবং আপনার মুখের উজ্জ্বলতা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে।
লেবুর রস:লেবুর রস ব্রণ ও মেছতা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লেবুর রসে থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যা আমাদের ত্বকের জন্য উপকারী। পাশাপাশি লেবুর রস মুখে ব্রণ ও মেছতা দূর করতে সহায়তা করে। তবে লেবুর রস সরাসরি মুখে লাগানো কখনোই উচিত নয়। লেবুর রস কোন কিছুর সঙ্গে মিশিয়ে তারপর ত্বকে ব্যবহার করতে হয়। কিছুটা পরিমাণ লেবুর রসের সাথে কিছুটা ঠান্ডা পানি মিশিয়ে নিন।
তারপর সেটি পুরো মুখে লাগিয়ে নিন। এরপর শুকিয়ে যাওয়ার জন্য ৮ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এভাবে নিয়ম করে কয়েকদিন ত্বকে লেবুর রস ও পানি মিশিয়ে ব্যবহার করুন তাহলে আপনার মুখের ব্রণ ও মেছতার সমস্যা দূর হয়ে যাবে। অবশ্যই মনে রাখবেন লেবুর রস সূর্যের আলোর ক্ষতিকর রশ্মি থেকে আমাদের ত্বককে সুরক্ষিত রাখে।
আমন্ড অয়েল: ব্রণ ও মেছতা নিরাময়ে আমন্ড অয়েলের উপকারিতা অস্বীকার করা যাবে না। যাদের ত্বকে অতিরিক্ত ব্রণ ও মেছতা রয়েছে তারা ৫ থেকে ৬ ফোটা আমন্ড ওয়েল নিয়ে পুরো মুখে হালকা ভাবে মাসাজ করুন। এভাবে 5 থেকে 7 মিনিট পুরো মুখে মাসাজ করুন। তারপর এভাবেই ঘন্টা দুয়েক রেখে ঠান্ডা
পানি ও ফেসওয়াশ দিয়ে পুরো মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এভাবে প্রতিদিন নিয়ম করে একবার করে আমন্ড অয়েল ত্বকে মাসাজ করলে ব্রণ ও মেছতার সমস্যা ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাবে। সেই সাথে আপনার ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল ও সতেজ।
হালকা গরম তেল: কি ভাবছেন তেল আমাদের ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। আপনার এই ধারণা মোটেও সঠিক নয়,ত্বকে ব্যবহার করা যায় এমন তেল আমাদের ত্বকের জন্য কোনভাবেই ক্ষতিকর নয়। বরং এই তেল ব্যবহার করে মুখের অতিরিক্ত ব্রণ ও মেছতা দূর করা যায়। তার জন্য প্রথমেই আমাদেরকে ত্বকে ব্যবহার উপযোগী যেকোনো তেল কিছুটা পরিমাণে নিতে হবে। তারপর সেই তেল আগুনের তাপে হালকা গরম করে নিতে হবে। এবার এই গরম তেল পুরো মুখে লাগিয়ে নিয়ে মাসাজ করুন।
এভাবে ৫ থেকে ৭ মিনিট ভালোভাবে মাসাজ করতে থাকুন।তারপর অপেক্ষা করুন তেল পুরোপুরিভাবে মুখে শুকিয়ে যাবার আগ পর্যন্ত। শুকিয়ে গেলে ভালো কোন ফেসওয়াশ দিয়ে পুরো মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিবেন। এভাবে যদি প্রতিদিন একবার করে গরম তেল আপনার মুখে ব্যবহার করেন তাহলে মুখের অতিরিক্ত ব্রণ ও মেছতা সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। এছাড়াও আপনার স্কিন গ্লো করবে।
লেখকের মন্তব্য
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা জানতে পেরেছেন মুখে অতিরিক্ত ব্রণ ও মেছতা হওয়ার কারণগুলো কি কি এবং অতিরিক্ত ব্রণ এবং মেছতার সমস্যা থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন সেই বিষয় সম্পর্কে। আশা করছি আপনি অতিরিক্ত ব্রণের সমস্যা কেন হয় এবং এটা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কি সেটা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের পাশে থাকার জন্য এবং এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য।
আমরা চেষ্টা করব এমন আরো তথ্যমূলক আর্টিকেল আপনাদের কাছে উপস্থাপন করার জন্য। যাতে করে আপনারা আপনাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান পেয়ে যান। শিক্ষণীয়, সৃজনশীল, তথ্যমূলক ও চিকিৎসাভিত্তিক আর্টিকেল পড়তে চাইলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন এবং আর্টিকেল পড়ে ভালো লাগলে সেটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url