মাথা ব্যাথার কারন কি এবং এর প্রতিকার জানুন
মাথা ব্যথা খুবই পরিচিত একটি শব্দ। মাথাব্যথা শুরু হলো পাগল পাগল লাগে। মাথা ব্যথা নিয়ে অনেকেই হয়তো দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এবং অনেক খোঁজাখুঁজি করছেন মাথাব্যথা চিরতরে দূর করার জন্য। তাহলে আজকে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য ঘরোয়া ভাবে মাথা ব্যথা দূর করতে গোপন কিছু টিপস ফলো করতে পারেন।
মাথা ব্যথা নিয়ে কাজকর্ম করতে হয়তো অনেক সমস্যায় পড়েছেন। কি খাবার খেলে মাথাব্যথা দূর হবে। কি ওষুধ খেতে হবে ,কি কি করলে মাথা ব্যাথার থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়া যাবে। বিস্তারিত জেনে নেই,
ভূমিকা
আপনারা কি জানেন অতিরিক্ত মাথা ব্যথা হওয়ার কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। মাথা ব্যাথার প্রতিকার জানুন। আমাদের অনিয়মিত খাবার খাওয়ার ফলে মাথা ব্যথা হতে পারে। আবার অনিয়মিত ঘুমানোর ফলে মাথা ব্যাথা হয়। অনেকে আবার মাইগ্রেনের জন্য প্রচন্ড মাথাব্যথা হতে পারে। কিছু কিছু মানুষের মাথায় সমস্যা রয়েছে এর জন্যও মাথাব্যথা করে। মাথার পেছনে অথবা একপাশে ব্যথা করলে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
পোস্ট সূচীপত্র:-হঠাৎ হঠাৎ মাথা ব্যথা শুরু হওয়ার কারণ কি ? মাথার মাঝখানে ব্যথা হওয়ার কারণ কি?এমন মাথা ব্যথা হলে কি করতে হবে, কি কি রোগ হলে এমন ব্যাথা হতে পারে।আরো বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
অতিরিক্ত মাথা ব্যথা করার কারণ কি
অতিরিক্ত মাথা ব্যথার প্রধান কারণ হলো দুশ্চিন্তা করা। অনিয়মিত ঘুম মাথা ব্যথার অন্য একটি কারণ।এগুলো কারণেই মাথাব্যথা শুরু হয়। এবং এই মাথাব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।অতিরিক্ত গরমের কারণেও মাথাব্যথা হতে পারে। এবং পর্যাপ্ত পানি পান না করলে মাথা ব্যাথা হয়ে থাকে। অনেকের আবার মাইগ্রেন থেকে মাথা ব্যাথা শুরু হয়। প্রচন্ড শব্দের কারণে মাথাব্যথা হয়ে থাকে ।এবং পিরিয়ডের কারণে মাথাব্যথা হতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপের কারণে মাথাব্যথা করতে পারে। শরীরে বাত ব্যথা হলে মাথা ব্যথা করতে পারে। শরীরে জ্বর আসার আগ মুহূর্তে প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করতে পারে। বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলেও মাথা ব্যাথা হতে পারে।চোখের সমস্যার কারণে ও মাথা ব্যাথা হতে পারে। কানে সমস্যা হলে মাথা ব্যাথা করতে পারে।আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কারণে মাথাব্যথা হতে পারে।
মাথার পেছনে ব্যাথা হওয়ার কারণ কি
আমরা প্রায়ই মাথার পিছনে ব্যথা নিয়ে সমস্যায় পড়ি। মাথার পেছনে ব্যথা করার কারণ হলো মাথায় প্রচন্ড আঘাত পাওয়ার ফলে হতে পারে ।আরো অন্যান্য কারণেও ব্যাথা করতে পারে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন নরমাল রক্তচাপ থেকে রক্তচাপ কমে গেলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এতে মাথার পিছনের অংশে ব্যথা করতে পারে । তবে এই সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। তাই অবহেলা করা উচিত নয়, এজন্য খুব তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। মাথার পেছনে ব্যথা করার বেশ কিছু কারণ পাওয়া গিয়েছে সেগুলো হলো ।
অতিরিক্ত টেনশন: একজন মানুষ অতিরিক্ত টেনশন করলে মাথার পেছনে ব্যথা হতে পারে। অনেকে সামান্য বিষয় নিয়ে অনেক টেনশন করে। এটি একটি খুব খারাপ অভ্যাস, তবে এই অভ্যাস পরিহার করতে হবে, তাহলে মাথার পেছনে ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
শরীর দুর্বল ও ক্লান্ত ভাব:মানুষের শরীর যখন দুর্বল ও ক্লান্ত ভাব আসে তখনই বিভিন্ন ধরনের রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। শরীর দুর্বল হলে মাথার পেছনে ব্যথা করতে পারে।বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের অভাবেও শরীর দুর্বল হতে পারে। এই জন্য প্রতিনিয়ত পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খাওয়া উচিত। আর সব সময় চেষ্টা করতে হবে পানি বেশি বেশি করে খাওয়ার। কারণ শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি থাকলে আমাদের শরীর সুস্থ সবল থাকবে। শরীর ঠিক থাকলে মাথার পেছনে আর ব্যথা হবার সম্ভাবনা নেই।
উচ্চ রক্তচাপ: বর্তমান সময়ে উচ্চ রক্তচাপের রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। এটি একটি মারাত্মক সমস্যা। যদি কারো উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি পায় তাহলে মাথার পেছনে প্রচন্ড ব্যথা করতে পারে।তাই চেষ্টা করতে হবে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে। যেসব খাবার নিয়মিত খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে, সেগুলো খাবার সঠিক নিয়ম মেনে প্রতিদিন খেতে হবে।তাহলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব।
রক্তচাপ কমে গেলে:শরীরে যেমন উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি পেলে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। তেমনি উচ্চ রক্তচাপ কমে গেলেও শরীরে বা মাথায় পেছনে প্রচন্ড ব্যথা করতে পারে। তাই সব সময় চেষ্টা করতে হবে উচ্চ রক্তচাপ যেন নিয়ন্ত্রণ থাকে। যেসব খাবার খেলে রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, নিয়মিত সেই খাবারগুলো খেতে হবে।
মানসিক চাপ:মানসিক চাপ শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর মাথার পেছনে ব্যথা করার আরেকটি কারণ হচ্ছে মানসিক চাপ। এটি খুব মারাত্মক একটি সমস্যা যা আপনাকে ধীরে ধীরে শেষ করে দেবে । এজন্য শত কষ্টের মাঝেও হাসি খুশি থাকার চেষ্টা করবেন। এতে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, মাথার পেছনের ব্যথা ও দূর হয়ে যাবে ।
পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে :মানবদেহে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে শরীরে রোগ ব্যাধি সৃষ্টি হয়। ঘুম শরীরের জন্য এক ধরনের মহা ঔষধ ।সঠিক পরিমাণে ঘুম হলে শরীর সুস্থ থাকে এবং শরীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এজন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম দরকার শরীরের জন্য। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে মাথার পেছনে ব্যথা হতে পারে। সেই ব্যথার সঙ্গে ঘাড় ব্যথা এবং বমি বমি ভাব হতে পারে। তীব্র ব্যথার কারণে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যায়। এইজন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে।
ধূমপান: মানব শরীরের জন্য ধূমপান মারাত্মক ক্ষতিকর।ধূমপানের কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম হয় না খাবার-দাবারের ওপর অরুচি হয় ,টেনশন বেশি হয় এতে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যায়।এই কারণে মাথার পেছনে ব্যথা হতে পারে। নিজেকে সুস্থ রাখতে হলে ধূমপান পরিহার করতে হবে ।
শারীরিক সমস্যা: শারীরক বিভিন্ন সমস্যার কারণে মাথার পেছনে ব্যথা করতে পারে।এজন্য শরীরে কোন সমস্যা থাকলে অতি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং সারিয়ে তুলতে চেষ্টা করতে হবে ।তাহলে মাথাব্যথা সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে ।
অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগা :আমাদের অনিয়মিত খাবার খাওয়ার ফলেই অনেক সময় অতিরিক্ত ক্ষুধা লেগে যায় যার ফলে মাথার পেছনে প্রচুর ব্যাথা শুরু হতে পারে। এইজন্য অনিয়মিত খাবার খাওয়া যাবেনা, এতে শরীরের নানা রকম ক্ষতি হবে,প্রচন্ড ক্ষুধার জন্য একেবারে অনেক খাবার খেয়ে ফেললে পেট ব্যথা ও মাথাব্যথা শুরু হয়ে যাবে।শরীরে আরো বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা পারে এই জন্য এই অভ্যাস বর্জন করুন।
মাইগ্রেন কি ,মাইগ্রেনের ব্যথার কারণ ও লক্ষণ
মাথা ব্যথা করে না এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না ।শতকরা ৯৫ ভাগ মানুষই মাথা ব্যথার অতিরিক্ত যন্ত্রণায় ভুগে থাকেন। অনেক মানুষের মাঝে মাঝেই মাথার পেছনের দিকে তীব্র ব্যথা করতে পারে। মাথার পিছনে এই তীব্র ব্যথা করার একমাত্র কারণ হলো মাইগ্রেন। মাইগ্রেন কোন সাধারণ মাথাব্যথা না,এটি মাথা ব্যথার অন্যতম উৎস। মাইগ্রেনের মাথা ব্যথায় একটি মানুষ অসহ্য তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে। অনেক সময় মাথার পেছনদিক থেকে শুরু করে পুরো মাথা জুড়েই তীব্র যন্ত্রণা শুরু হতে পারে। আমরা অনেকেই জানিনা মাইগ্রেন কি। আসলে মাইগ্রেন হলো মাথার পেছনের দিকে তীব্র এক ধরনের ব্যথা অনুভূত হওয়া।
যা মাথার একপাশে কাঁপুনি দিয়ে তীব্র আকারের ব্যাথার সৃষ্টি করে। এই ব্যথা ধীরে ধীরে পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়। মাইগ্রেনের ব্যথায় কখনো কখনো ব্যথার সঙ্গে দৃষ্টিশক্তি লোপ পেতে দেখা যায়। এক কথায় মাইগ্রেনের সমস্যার কারণে দৃষ্টিশক্তির বিভ্রম ঘটে। আবার অনেক মানুষের ক্ষেত্রে দেখা যায় মাইগ্রেনের মাথাব্যথা শুরু হলে হালকা বমি বমি ভাব এমনকি বমিও হতে পারে ।মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে মাথা ব্যাথা শুরু হয়।
মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দেওয়ার আগে আমাদের শরীরে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা যায় ।তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো চোখে হঠাৎ করেই কোনো কারণ ছাড়াই আলোর ঝলকানির মত দেখা ।কিন্তু বেশিরভাগ সময়েই দেখা যায় মাইগ্রেনের কোন পূর্ব লক্ষণ মানুষের শরীরের মধ্যে প্রকাশ ঘটে না।অর্থাৎ বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই মাইগ্রেনের কোনো রকম পূর্ব লক্ষণ উপলব্ধি করা যায় না। মানুষের মধ্যে এই ধরনের মাইগ্রেনই সবচেয়ে বেশি দেখতে পাওয়া যায়।
অপরদিকে আরেক ধরনের মাইগ্রেন আছে, যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে সাইলেন্ট মাইগ্রেন বলা হয়ে থাকে । সাইলেন্ট মাইগ্রেনের ক্ষেত্রে কোনো রকমের মাথাব্যথা অনুভব করা যায় না কিন্তু বেশ কিছু লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়। মাইগ্রেনের প্রধান লক্ষণই হলো মাথার একপাশে তীব্র থেকে মাঝারি ধরনের ব্যথা অনুভূত হওয়া ।তবে অনেকের ক্ষেত্রে পুরো মাথা জুড়েই তীব্র বা মাঝারি ধরনের ব্যথা হতে পারে ।মাইগ্রেনের আরো বেশ কিছু লক্ষণ হল শরীরে অতিরিক্ত ঘাম হওয়া,
প্রতিদিনের কাজকর্মে ও লেখাপড়ায় মনোযোগহীনতা, অনেক সময় শরীরের মধ্যে তীব্র গরম বা তীব্র ঠান্ডা অনুভব করা, আবার অনেকের ক্ষেত্রে পেট ব্যথা সমস্যাও দেখা দেয়, অনেক সময় মাইগ্রেনের কারণে ডায়রিয়া হতে পারে। এই লক্ষণ গুলোর মধ্যে যে কোন একটি যদি আপনার মধ্যে দেখতে পান এবং সেইসাথে মাথা ব্যথা করে তাহলে আর দেরি না করে অবশ্যই একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। আমরা বেশিরভাগ মানুষই জানি না মাইগ্রেন কেন হয়।
মাইগ্রেন মূলত হয় মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক কিছু ক্রিয়া কালাপের জন্য। যখন মস্তিষ্কের স্নায়ু ব্যবস্থা অস্বাভাবিক হয়ে পড়ে এবং সেই সাথে শরীরের রাসায়নিক উপাদান কমতে শুরু করে তখনই মাথার একপাশে প্রচন্ড ব্যথা শুরু হয়। যেটাকেই চিকিৎসা বিজ্ঞানে মাইগ্রেনের ব্যথা বলা হয়। অতএব স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে মস্তিষ্কে অস্বাভাবিক কার্যকলাপের ফলেই মাইগ্রেন হয়। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন হরমোন জনিত কারণেও মাইগ্রেন হতে পারে।
মানব শরীরের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের হরমোন রয়েছে। এই হরমোন গুলোর অস্বাভাবিক পরিবর্তন বা স্বাভাবিক কার্যকলাপের পরিবর্তন ঘটার ফলেও মাইগ্রেন হতে পারে। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকদের মতে একজন নারী যখন ঋতুচক্রের সময় অতিবাহিত করেন তখনই সেই নারী সব থেকে বেশি মাইগ্রেনে ভুগতে পারেন । বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার কারণে ও মাইগ্রেন হতে পারে। যেমন: ঘুম কম হওয়া, দীর্ঘ রাত অব্দি জেগে থাকা, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা, হঠাৎ করেই কঠোর পরিশ্রম করা,
অনিয়মিত খাবার গ্রহণ, পানি কম খাওয়া ইত্যাদি। বিভিন্ন ধরনের পরিবেশগত কারণেও মাইগ্রেন হতে পারে। অতিরিক্ত কোলাহল পূর্ণ পরিবেশে থাকলে অনেকের মাইগ্রেনের সমস্যা হয়। আবার হঠাৎ করেই কোন অতিরিক্ত ঠান্ডা ও শীতল এলাকা থেকে যদি তীব্র গরম পড়েছে এমন এলাকায় যান তাহলে মাইগ্রেন হতে পারে। সত্যি কথা বলতে গেলে মাইগ্রেনের তেমন কোন চিকিৎসা নেই। তবে একজন রেজিস্টার চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করে
জীবন যাপন পরিচালনা করলে অনেকাংশেই মাইগ্রেনকে এড়িয়ে চলা যায়। তারপরেও যদি ঘনঘন তীব্র মাথা ব্যাথা অনুভূত হয়, অতিরিক্ত বমি ও মাথা ব্যাথা একসঙ্গে হয় এবং সপ্তাহে ৭ দিনের ৪ দিনই তীব্র মাথাব্যথা করে তাহলে অবশ্যই ভালো একজন রেজিস্টার্ড ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করতে হবে। তাহলে মাইগ্রেনের সমস্যা অনেকাংশেই নিরাময় করা সম্ভব হবে।
পরিশেষে একটা কথা অবশ্যই মনে রাখবেন মাইগ্রেনের মাথাব্যথা শুরু হলে অতি উচ্চ মাত্রার ব্যথা নাশক ট্যাবলেট খাওয়া থেকে বিরত থাকুন ।কারণ উচ্চ মাত্রার ব্যথা নাশক ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হতে পারে ।তাই অতি উচ্চমাত্রার ব্যথার নাশক ট্যাবলেট খাওয়ার আগে সাবধানতা অবলম্বন করাই শ্রেয়।
ওষুধ ছাড়াই মাথা ব্যথা নিরাময়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
মাথা ব্যথা খুবই পরিচিত একটি অসুখ। জীবনে কোনদিন মাথাব্যথা করেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। কম বেশি প্রত্যেকটা মানুষেরই কোন না কোন সময় মাথাব্যথা করে। মাথা ব্যথা করলেই আমরা সাথে সাথে সেটা কমানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের ঔষধ খেয়ে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা প্রত্যেকটা ওষুধেরই কিছু না কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
এই ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে ।তাই এখন আমরা জানবো ওষুধ ছাড়া কিভাবে মাথা ব্যথা নিরাময় বা মাথাব্যথা থেকে রেহাই পাওয়া যায় তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। নিচে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট গুলো উল্লেখ করা হলো:
- অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা যাবে না
- গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকা যাবে না
- পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে
- সময় মত খাবার খেতে হবে অনিয়ম করা যাবে না
- বেশি বেশি করে পানি পান করতে হবে
- প্রতিদিন আদা দিয়ে চা খেতে হবে
- তীব্র রোদের মধ্যে খালি মাথায় দীর্ঘ সময় থাকা যাবে না
- অযথা চিল্লাচিল্লি বা জোরে চিৎকার করা যাবে না
- তীব্র শব্দের সামনে থাকা যাবে না
- পুষ্টিকর সুষম খাবার খেতে হবে
- কানে হেডফোন লাগিয়ে দীর্ঘ সময় গান শোনার যাবে না
- দীর্ঘ সময় মোবাইল বা টিভি দেখা যাবে না
- কোন ধরনের মাদকদ্রব্য গ্রহণ করা যাবেনা
- তামাক পাতা বা জর্দা দিয়ে পান খাওয়া যাবেনা
- অতিরিক্ত গরম পানি মাথায় ঢালা যাবে না
- অতিরিক্ত বকবক করা থেকে বিরত থাকতে হবে
- সব সময় মাথা ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করতে হবে
- উচ্চস্বরে কথা না বলে আস্তে আস্তে কথা বলতে হবে
- সম্ভব হলে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস পানি ও একটি ডিম সিদ্ধ খেতে হবে
- সর্দি কাশি হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ সর্দি কাশি হলে মাথা ব্যাথা করে
- অতি উচ্চ মাত্রার ব্যথা নাশক ট্যাবলেট দীর্ঘদিন সেবন করা যাবে না
উপরের পয়েন্টগুলো অনুসরণ করে চললে আশা করি কোন রকমের ওষুধ ছাড়াই মাথা ব্যাথার সমস্যা নিরাময় করা যাবে। সেই সাথে আমাদের মাথা ব্যাথার সমস্যা পরবর্তীতে আর নাও হতে পারে। তবে অবশ্যই এই নিয়মগুলো সঠিকভাবে মেনে চলতে হবে। সঠিকভাবে নিয়মগুলো প্রতিদিনের জীবনে অনুসরণ করে চললে মাথা ব্যাথা সমস্যা থেকে অনেকাংশেই রেহাই পাওয়া যাবে ।
মাথা ব্যথার জন্য যে ওষুধগুলো খাওয়া উচিত
মাথা ব্যাথা প্রত্যেকটা মানুষের জন্যই অস্বস্তিকর ও অসহ্য যন্ত্রণার ।মাথা ব্যথা করার জন্য মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। অনেকে আবার মাথা ব্যথার জন্য বিছানা থেকে উঠতেও পারে না। কারো কারো মাথাব্যথা করার জন্য বমি বমি ভাব এবং চোখে ঝাপসা দেখা সমস্যাও হয় ।তবে চিন্তার কোন কারণ নেই। মাথাব্যথা দূর করার জন্য বাজারে অনেক ধরনের ওষুধ পাওয়া যায়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ওষুধ হল:
- Paracetamol
- Tufnil
- Napa
- Napa Extra
- Norium
- Rizamig
- Lasmi
- Pizofen
- Topirva
- Tryptin
- Nexcital
- Emijoy
- Setra
- Norium 10
- Tufin
- Ace Plus
- Reset Plus
- Cafedon
- Cafenol
- Caffo
- Fap Plus Feverex
ইত্যাদি ওষুধগুলো একজন ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে সেবন করলে আশা করছি আপনারা মাথা ব্যাথা সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন ।তবে অবশ্যই ঔষধ গুলো খাওয়ার আগে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে ।
লেখক এর সর্বশেষ মন্তব্য
মাথাব্যথা সমস্যা যার হয় কেবল সেই বোঝে এটা কতটা যন্ত্রণাদায়ক এবং অস্বস্তিকর। মাথা ব্যথা করলে কোন কিছুই করতে ভালো লাগে না। কাজকর্মে মন বসে না, পড়ালেখা করতেও ইচ্ছা করে না। মাথার মধ্যে প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হতে থাকে। তাই আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম মাথা ব্যথা কেন হয়। মাথা ব্যথার সমস্যা ওষুধ ছাড়াও কিভাবে নিরাময় করা যায় সেটাও আমরা জানতে পেরেছি। এছাড়াও মাইগ্রেন কি এবং মাইগ্রেনের কারণে কিভাবে মাথাব্যথা হয় সেটাও আমরা বিস্তারিতভাবে বুঝতে পারলাম।
সাধারণত মাথা ব্যথার প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা। সবসময় অতিরিক্ত চিন্তা করার কারণেই আমাদের মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যকলাপ ব্যাহত হয়। যার ফলে মাথা ব্যথা করা শুরু হয়। তাই আমাদের সকলেরই উচিত অতিরিক্ত চিন্তা করা থেকে নিজেকে বিরত রাখা। এছাড়াও শারীরিক আরো অনেক কারণেই মাথা ব্যাথার সমস্যা হয়ে থাকে। যা আমরা বিস্তারিতভাবে আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। পাশাপাশি মাথা ব্যাথা করলে কি কি ওষুধ খাওয়া যেতে পারে সেই সম্পর্কেও আমরা ভালোভাবে জানতে পারলাম।
ধন্যবাদ আপনাকে দীর্ঘ সময় ব্যয় করে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য। এমন স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সম্পর্কিত আর্টিকেল পড়তে চাইলে আমাদেরকে নিয়মিত অনুসরণ করতে পারেন। আশা করছি আপনি উপকৃত হবেন। আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে আপনার পরিচিতদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন। তাহলে আপনার মাধ্যমে তারাও স্বাস্থ্য সহায়ক এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হতে পারবেন ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url