অনার্স নাকি ডিগ্রী কোনটা করলে ভাল হবে বিস্তারিত জানুন
আমরা পড়াশোনা করি ভালো কিছু করার জন্য,কিন্তু সিদ্ধান্ত নিতে পারি না যে কি করব।কোনটা করলে ভালো হবে অনার্স নাকি ডিগ্রী। এটা নিয়ে সবার মধ্যেই একটা দুশ্চিন্তা কাজ করে।আর নয় চিন্তা আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্যই। অনার্স নাকি ডিগ্রি কোনটা আপনার জন্য ভালো হবে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
অনেকে আবার কলেজ নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন কোন কলেজে ভর্তি হবেন? কি সাবজেক্ট নিয়ে পড়লে ভালো হবে ? এই সকল প্রশ্নের উত্তর পেতে চাইলে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ অবধি পড়ুন।
সূচিপত্র
অনার্স নাকি ডিগ্রী কোনটা করলে ভালো হবে , বাংলাদেশের প্রায় ৯০% ছাত্রছাত্রী জানে না যে অনার্স এবং ডিগ্রির মধ্যে পার্থক্য কি। কোনটা তাদের ক্যারিয়ার গঠনের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে। এইচএসসি পরীক্ষা দেবার পরে অধিকাংশ শিক্ষার্থী সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে। তারা বুঝতে পারে না এখন তাদের কি করা উচিত। কোনটা নিয়ে পড়া উচিত। শিক্ষার্থীরা এই হীনমন্যতায় ভোগার কারণে অনেক সময় ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। যার মাশুল তাদের চাকরি জীবনে দিতে হয়।
আরো পড়ুন: বাদামের পুষ্টিগুণ কি
অনেকে ক্যারিয়ার গঠনে ব্যর্থ হয়। উপযুক্ত চাকরিতে আবেদন পর্যন্ত করতে পারেনা। তখন অধিকাংশ শিক্ষার্থী এবং তাদের পরিবার হতাশায় দিন কাটায়। কিন্তু তাদের আর নতুন করে কিছু করার উপায় থাকে না। তাই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করার আগে আমাদের অবশ্যই সবকিছু যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। একইভাবে এইচএসসি পরীক্ষায় পাশ করার পরে ডিগ্রি করবো নাকি অনার্স করব এই সিদ্ধান্তটাও ভেবে চিন্তে নেয়া উচিত। কারণ কোনটা করলে ভবিষ্যতে আমি আমার যোগ্যতা অনুযায়ী ভালো একটা চাকরি পাব সেটা নির্ভর করবে,
আমি কি নিয়ে পড়াশোনা করেছি সেটার উপর ভিত্তি করে। তাই আজকে আমরা জানব এইচএসসি পাশ করার পরে আমরা ডিগ্রিতে পড়বো নাকি অনার্সে পড়বো। ডিগ্রি এবং অনার্সের পার্থক্য এবং ভবিষ্যৎ কি হবে সেটা জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট আলোচনা করা হলো:
কোন কোন বিভাগ থেকে ডিগ্রিতে পড়া যাবে
আমরা অনেকেই ডিগ্রি কি এ বিষয়টা বুঝিনা। আমরা ভেবে থাকি ডিগ্রি হয়তো এমন একটি বিষয় যা সবাই করতে পারবে না। অনেকের মধ্যেই ডিগ্রি সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। অনেকেই ভেবে থাকে এইচএসসি পাস করার পরে আদৌ কি আমরা ডিগ্রিতে পড়তে পারব। আবার অনেকেই ভেবে থাকেন হয়তো সকল বিভাগ থেকে ডিগ্রিতে পড়া যায় না। কিন্তু আমাদের এই সকল ধারনা সম্পূর্ণ ভুল। এইচএসসি পাস করার পরে যে কোন বিভাগের যে কোন শিক্ষার্থী চাইলেই ডিগ্রিতে আবেদনের মাধ্যমে ডিগ্রিতে পড়ার সুযোগ পেতে পারেন।
আরো পড়ুন : কাঁঠালের খাওয়ার উপকারিতা কি
আপনি বিজ্ঞান, মানবিক, বাণিজ্য যে বিভাগের শিক্ষার্থী হন না কেন তাতে কোন প্রকার সমস্যা নেই। আপনি যদি চান আপনি ডিগ্রিতে পড়বেন তাহলে সঠিক নিয়ম মেনে ডিগ্রিতে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ডিগ্রিতে পড়তে পারবেন। এইচএসসির সময় আপনি কোন বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন সেটা ডিগ্রিতে পড়ার বিষয়ে কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। ডিগ্রিতে সকল বিভাগের শিক্ষার্থী পড়াশোনা করার সমান সুযোগ পায়। কোন বিভাগের প্রতি কোনো রকম বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয় না।
তবে অবশ্যই আপনাকে এইচ এস সি পাশ করতে হবে। কারণ আপনি যদি এইচএসসি পরীক্ষা দেবার পরে অকৃতকার্য হন তাহলে আপনি ডিগ্রিতে পড়াশোনা করার যোগ্যতা হারাবেন। আপনি চাইলেও তখন আর ডিগ্রিতে আবেদন করতে এবং ডিগ্রিতে পড়াশোনা করার কোন সুযোগ থাকবে না। আশা করছি এখন আপনাদের ডিগ্রী সম্পর্কে যে ভ্রান্ত ধারণা ছিল সেটা দূর হয়েছে।
ডিগ্রি করার সুবিধা কি কি
বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী ডিগ্রিতে পড়াশোনা করতে পছন্দ করেন। অনেকেই ভাবেন ডিগ্রি করলে তাদের ভবিষ্যৎ ভালো হবে। তবে ডিগ্রিতে পড়াশোনা করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল ডিগ্রিতে পড়াশোনা শেষ করতে সময় কম লাগে। মাত্র তিন বছরের মধ্যে ডিগ্রি সম্পন্ন করা যায়। ডিগ্রি করতে এই সময় কম লাগার জন্য অনেক শিক্ষার্থী ডিগ্রিতে পড়াশোনা করেন। আবার ডিগ্রিতে পড়াশোনা করলে পড়াশোনার চাপ অনেকটাই কম থাকে যার কারণেও অনেকে ডিগ্রি করে থাকেন। ডিগ্রিতে পড়াশোনা করতে টাকা পয়সা ব্যয় অনেকটাই কম হয়।
যার কারণে অনেক শিক্ষার্থী ডিগ্রিতে পড়াশোনা করেন। এছাড়াও ডিগ্রিতে অল্প পড়াশোনা করেও ভালো ফলাফল করার সুযোগ থাকে যার কারণে ও অনেকে ডিগ্রিতে পড়েন। আবার যেসব শিক্ষার্থী পড়াশোনা করার পাশাপাশি কোন চাকরি করতে চান তারাও ডিগ্রীকেই বেছে নেন পড়াশোনা করার জন্য। কারণ ডিগ্রিতে পড়াশোনা করার পাশাপাশি চাকুরী করার সুযোগ পাওয়া যায়। তাই আপনারা চাইলেও ডিগ্রিতে পড়াশোনা করতে পারেন। তবে সিদ্ধান্ত আপনার একান্তই ব্যক্তিগত।
ডিগ্রি করার অসুবিধা কি কি
ডিগ্রিতে পড়াশোনা করলে যেমন বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যায় ঠিক তেমনি ডিগ্রিতে পড়াশোনা করার অনেকগুলো অসুবিধাও রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ডিগ্রী সম্পন্ন করা কোন শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশে অনেকটাই কম মূল্যায়ন করা হয়। ডিগ্রিতে পড়াশোনা করলে জ্ঞান অর্জনের পরিধি অনেকটাই কম হয়। শিক্ষার্থীরা ডিগ্রিতে পড়াশোনা করে বিস্তারিতভাবে কোন কিছু জানতে ও বুঝতে পারে না। ডিগ্রিতে পড়াশোনা করলে ডিগ্রী চলাকালীন সময়ে কোনরকম গবেষণা করার সুযোগ শিক্ষার্থীরা পায় না।
একজন ডিগ্রীর শিক্ষার্থীর নির্দিষ্ট কোন একটি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ থাকে না। ডিগ্রীর শিক্ষার্থীকে অনেকগুলো বিষয় একসঙ্গে মিলিয়ে পড়তে হয়। যার ফলে কোন একটি বিষয় বিশদ আকারে জানার এবং বোঝার সুযোগ পায় না। ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর একজন শিক্ষার্থী উচ্চ পর্যায়ের কোন চাকরিতে আবেদন করার সুযোগ নাও পেতে পারেন। একজন ডিগ্রিতে পড়া শিক্ষার্থীকে অনেকেই ছোট করে দেখে থাকেন।
অনেকেই মনে করেন ডিগ্রিতে পড়াশোনা করা ছাত্র-ছাত্রীরা হয়তো মেধাবী হয় না। এছাড়াও ডিগ্রী সম্পন্ন করার পরে অনেকেই বিষন্নতায় ভোগেন। আবার অনেকেই চাহিদা অনুযায়ী ভালো চাকরি না পেয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। তাই আমাদের সকলের বুঝে শুনে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
ডিগ্রী শেষ করার পরে ভবিষ্যৎ কেমন হবে
আমাদের অনেকের মাঝেই একটি ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে ডিগ্রি করলে ভবিষ্যৎ একদমই ভালো হয় না। ডিগ্রি করলে ভালো কোন চাকরি পাওয়া যায় না। ডিগ্রিতে পড়াশোনা করলে ক্যারিয়ার ভালো হয় না। এই সকল ধারণা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। ডিগ্রিতে পড়াশোনা শেষ করার পরে একজন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনেক ভালো হবে। কিন্তু তার জন্য সেই শিক্ষার্থীকে ভালোভাবে পড়াশোনা করতে হবে। কারণ জ্ঞান অর্জন করতে না পারলে কোন কিছুতে পড়াশোনা করেই ভবিষ্যৎ ভালো হবে না। একজন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ কেমন হবে সেটা নির্ভর করে সে কেমন পড়াশোনা করেছে সেটার উপর ভিত্তি করে।
যেহেতু ডিগ্রি মাত্র তিন বছরের মধ্যে শেষ করা যায় তাই অল্প সময়ে বেকারত্ব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। অল্প সময়ের মধ্যেই ক্যারিয়ার গঠন করা যায়। মাত্র তিন বছরের ডিগ্রি শেষ করেই চাকরির করার সুযোগ পাওয়া যায়। যা অনার্স এর ক্ষেত্রে পাওয়া যায় না।কারণ অনার্স শেষ করতে চার বছর সময় লেগে যায়। এই দিক বিবেচনা করে ডিগ্রি করলেই ভবিষ্যৎ ভালো হবে। কারণ তিন বছরের মধ্যে ডিগ্রি সম্পন্ন করে চাকরি করার সুযোগ পাওয়া যাবে।
যা অন্য কোথাও পড়াশোনা করলে পাওয়া যাবে না। এছাড়াও ডিগ্রিতে পড়াশোনা করার পাশাপাশি চাকরি করার সুযোগ রয়েছে। যার ফলে একজন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করা অবস্থাতেই নিজেকে স্বাবলম্বী করে তুলতে পারবে। তাই সব দিক বিবেচনা করে ডিগ্রিতে পড়াশোনা করলে ভবিষ্যৎ অবশ্যই ভালো হবে বলে আমি মনে করি।
ডিগ্রিতে পড়ে কোন ধরনের চাকরি পাওয়া যাবে
আমরা অনেকেই মনে করে থাকি ডিগ্রিতে পড়াশোনা করে ভালো কোন চাকরি পাওয়া যাবে না। এই ভাবনাটা সম্পূর্ণ ভুল। অনার্স করেও যে সকল চাকরি করা যায় ডিগ্রিতে পড়াশোনা করেও ঠিক সেই সকল চাকুরী করার সুযোগ পাওয়া যায়। ডিগ্রিতে পড়াশোনা শেষ করে অনেক মানুষ বাংলাদেশের অনেক উচ্চ পর্যায়ের চাকরি করছেন। ডিগ্রি করেও ব্যাংক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, মাল্টিন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, উপজেলা পরিষদ, সিটি কর্পোরেশন,
এনজিও ও বীমা এবং বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি, আধা সরকারি ও বেসরকারি চাকুরী করতে পারবেন । ডিগ্রী করেও আপনি সকল ধরনের চাকরিতে সমান অধিকার পাবেন। চাকরির ক্ষেত্রে আপনাকে কোনরকম বৈষম্যের শিকার হতে হবে না। চাকরির ক্ষেত্রে আপনার যোগ্যতাকে প্রাধান্য দেয়া হবে। তাই কোন রকম দ্বিধা, সংকোচ না রেখে আপনি ডিগ্রিতে নির্ভয়ে পড়াশোনা করতে পারেন।
ডিগ্রি শেষ করতে কত বছর সময় লাগে
আমরা অনেকেই জানিনা ডিগ্রি শেষ করতে কত বছর সময় লাগে। অনেকের মধ্যেই অনেক রকম ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকেই মনে করেন অনার্সের মতই ডিগ্রি করতে চার বছর সময় লেগে থাকে। কিন্তু তাদের এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। ডিগ্রি শেষ করতে মোটেও চার বছর সময় লাগে না। মাত্র তিন বছরের মধ্যে ডিগ্রি সম্পন্ন করা যায়। ডিগ্রি সম্পন্ন করতে তিন বছরের বেশি সময় কখনোই লাগেনা। যদি আপনি বছর গ্যাপ দেন বা ফাইনাল পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন তাহলে আপনার তিন বছরের অধিক সময় লাগবে। যেমনটা অনার্সের ক্ষেত্রেও হয়ে থাকে। তবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ডিগ্রি শেষ করতে তিন বছরের অধিক সময় লাগে না।
ডিগ্রিতে পড়তে রেজাল্ট কেমন হওয়া দরকার
আমরা অনেকেই জানিনা ডিগ্রি করতে কেমন রেজাল্ট দরকার হয়। অনেকেই অনেক রকম চিন্তা ভাবনা করে থাকি। তবে একটা কথা আমরা সবাই জানি ভালো রেজাল্ট হলে ভালো কোন প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করার সুযোগ পাওয়া যায়। কথাটি ডিগ্রি করার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ভালো রেজাল্ট হলে ভালো কোন প্রতিষ্ঠানে ডিগ্রি করার সুযোগ পাওয়া যাবে। তবে খারাপ রেজাল্ট হলে যে ডিগ্রী করা যাবে না এমনটা নয়। এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ যেকোনো শিক্ষার্থী ডিগ্রিতে পড়তে পারবেন।
এক্ষেত্রে তার রেজাল্ট যত খারাপই হোক না কেন। সে যদি লাস্ট গ্রেডের রেজাল্টও করে তাহলেও সে ডিগ্রিতে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ডিগ্রিতে পড়াশোনা করতে পারবে। ডিগ্রিতে পড়াশোনা করার জন্য রেজাল্ট কোন অন্তরায় নয়। তবে রেজাল্ট অনুযায়ী সরকারি বা আধা সরকারিতে পড়ার সুযোগ দেওয়া হয়। তাই যেকোনো এইচএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী চাইলেই ডিগ্রিতে পড়াশোনা করার সুযোগ পাবেন।
কোন কোন বিভাগ থেকে অনার্সে পড়া যাবে
কোন কোন বিভাগ থেকে অনার্সে পড়া যাবে সেটা নিয়ে আমাদের অনেকের মধ্যেই ধোঁয়াশা রয়েছে। অনেক মানুষ মনে করেন সকল বিভাগ থেকে অনার্সে পড়াশোনা করার সুযোগ পাওয়া যায় না। তাদের এই ধারণাটি কোনভাবেই সঠিক নয়। সকল বিভাগ থেকেই অনার্সে পড়াশোনা করার সুযোগ পাওয়া যায়। আপনি মানবিক, বিজ্ঞান, বাণিজ্য যে বিভাগেরই শিক্ষার্থী হন না কেন আপনি চাইলেই অনার্সে পড়তে পারবেন। তবে অনার্সে পড়াশোনা করার জন্য বা অনার্সে ভর্তি হবার জন্য অবশ্যই আপনাকে এইচএসসি পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হতে হবে।
আপনি এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারলে যে কোন বিভাগ থেকেই অনার্সে পড়াশোনা করতে পারবেন। আপনার বিভাগ কোনভাবেই আপনার অনার্সে পড়ার বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। অনার্সে ভর্তি হবার পরে আপনাকে কোনরকম বৈষম্যের স্বীকারো হতে হবে না। অতএব সকল বিভাগ থেকেই সমান অধিকার নিয়ে অনার্সে পড়াশোনা করা যায়। আশা করছি এখন আপনাদের কনফিউশন দূর হয়েছে।
অনার্সে পড়ার সুবিধা কি কি
পড়াশোনা করার ক্ষেত্রে শতকরা 80 পার্সেন্ট শিক্ষার্থীরাই অনার্সকে বেছে নেন। শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গঠনে অনার্স মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। অনার্স সম্পূর্ণ করার পরে একজন শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ার উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। অনার্সে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট একটি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ পায়। তারা সেই বিষয়ে বিস্তারিত গবেষণা করতে পারে। অনার্সে পড়াশোনা করলে শিক্ষার্থীরা খুব ভালোভাবে একটি বিষয়কে বিস্তারিতভাবে জানতে ও বুঝতে পারে।
শিক্ষার্থীরা চারটা বছর ধরে একটি বিষয়ের উপর নানান রকম অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন। অনার্স করলে শিক্ষার্থীরা ভালো পর্যায়ে নিজেকে নিয়ে যেতে পারে। অনার্স শেষ করার সাথে সাথে বাংলাদেশের যেকোনো ধরনের চাকরিতে তারা আবেদন করতে পারেন। অনার্স শেষ করার পরে একজন শিক্ষার্থী চাইলে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পরীক্ষা বিসিএস দিতে পারেন। বিসিএস এর মাধ্যমে নিজের ভবিষ্যৎকে আরো উচ্চপর্যায়ে নিয়ে যাবার সুযোগ পান অনার্সের শিক্ষার্থীরা।
এছাড়াও অনার্স কমপ্লিট করা একজন শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশে যথেষ্ট পরিমাণে মূল্যায়ন দেয়া হয়।অনার্সের একজন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন ধরনের গবেষণার সুযোগ প্রদান করা হয়ে থাকে। অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা চাইলেই নিজেদেরকে অধিকতর গবেষণার কাজে লাগাতে পারেন। এছাড়াও অনার্স করলে চাকরি পাওয়ার সুযোগটা বেশি থাকে। যা ডিগ্রি করার থেকে অনেক গুণ বেশি।
অনার্সে পড়ার অসুবিধা কি কি
অনার্স কি এবং অনার্স কাকে বলে সেটা কম বেশি আমরা সবাই জানি। অনার্স করার যেমন অনেক সুবিধা রয়েছে ঠিক তেমনি অনার্স করার বেশ কিছু অসুবিধা রয়েছে। যেমন অনার্স করতে দীর্ঘ সময় লাগে। অর্থাৎ অনার্স কমপ্লিট করতে চার বছর সময় লাগে। যা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত সময়সীমা। আবার অনার্সে পড়াশোনা করতে টাকা পয়সা অনেক বেশি ব্যয় হয়। যা অনেক পরিবারের পক্ষে কষ্টকর হয়ে পড়ে। অনেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করতে চান।
কিন্তু অনার্স করলে চাকরির পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া একজন শিক্ষার্থীর পক্ষে অনেক কষ্টকর হয়ে পড়ে। যাদের রেজাল্ট ভালো না তারা যদি অনার্স করতে চান তাহলে দেখা যায় অনেক সময় তারা তাদের মন মত সাবজেক্ট নাও পেতে পারেন। মন মত বা পছন্দ মত সাবজেক্ট না পাওয়ার কারণে অনেক শিক্ষার্থী হতাশায় ভোগেন এবং এই হতাশা থেকে তাদের ক্যারিয়ার নষ্ট হয়ে যায়।
আর বাংলাদেশের যেহেতু শতকরা ৮০% শিক্ষার্থী অনার্স করতে চায় তাই এই বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থীকে কলেজে সিট দেওয়া অনেক সময় অসম্ভব হয়ে পড়ে। যার কারণে অনেক শিক্ষার্থী অনার্সে আবেদন করেও কোনো রকম ভর্তির সুযোগ পান না। তাদেরকে না চাইতেও অনার্সে ভর্তির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হয় ।যার ফলে অনেক শিক্ষার্থী পরবর্তীতে আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চান না।
যা আমাদের এবং আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। কারণ একটি জাতির মেরুদন্ডই হলো শিক্ষা। অন্যদিকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণে অনার্স কমপ্লিট করা শিক্ষার্থী বিভিন্ন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হন। কিন্তু এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর কর্মসংস্থান নেই। তাই দিন দিন শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাংলাদেশে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অনার্স শেষ করার পরে ভবিষ্যৎ কেমন হবে
বাংলাদেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী অনার্স করে। অনার্স করার পড়ে একজন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনেক উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। অনার্স কমপ্লিট করার পরে চাইলেই একজন শিক্ষার্থী বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি, আধা সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার সুযোগ পান। এছাড়াও অনার্স করার পরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পরীক্ষা বিসিএস দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে। বিসিএস পরীক্ষা দেয়ার পরে উত্তীর্ণ হলে তার ভাগ্যই বদলে যায়।
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের চাকুরি গুলো তারা করতে পারেন। অনার্স শেষ করে কাউকে ঘরে বেকার বসে থাকতে হয় না। চাইলেই যে কোন চাকরিতে নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী যোগদান করতে পারবে। তবে অবশ্যই যেখানে চাকরি করবে সেখানে কর্তৃপক্ষের নীতিমালা অনুযায়ী নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে চাকুরী পেতে হবে। তবে নিঃসন্দেহে একজন অনার্স কমপ্লিট করা শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনেক অনেক ভালো হবে।
তারা চাইলেই নিজেকে অনেক উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবে। বাংলাদেশের এমন কোন চাকরি নেই যা একজন অনার্স কমপ্লিট করা শিক্ষার্থী করতে পারবে না। কিন্তু অনেক সার্কুলারে অনেক নীতিমালা, শর্তাবলী থাকতে পারে বা উচ্চতর ডিগ্রি চাইতে পারে। সে ক্ষেত্রে অনার্স শেষ করা শিক্ষার্থী সেই সার্কুলারে আবেদন করতে পারবে না। তবে সকল পর্যায়ের চাকরিতেই আবেদন করার সুযোগ থাকে।
অনার্স শেষ করতে কত বছর সময় লাগে
আমরা অনেকেই জানিনা অনার্স শেষ করতে কত বছর সময় লাগে বা একজন শিক্ষার্থী কত বছরে অনার্স কমপ্লিট করতে পারে। অনার্স হল চার বছর মেয়াদী। একজন শিক্ষার্থী অনার্সে চার বছর পড়াশোনা করার পরে সে অনার্স কমপ্লিট করতে পারে। অনার্স কমপ্লিট করতে চার বছরের বেশি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সময় লাগে না।
তবে বছর গ্যাপ, ফাইনাল পরীক্ষায় অকৃতকার্য এ সকল কারণে অনার্স কমপ্লিট করতে চার বছরের পরেও দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। সেটা নির্ভর করবে একজন শিক্ষার্থীর উপর। তবে অনার্স শেষ করতে চার বছরের বেশি সময়ের দরকার হয় না। চার বছরের মধ্যেই একজন শিক্ষার্থী অনার্স শেষ করতে পারেন। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।
অনার্সে পড়তে রেজাল্ট কেমন হওয়া দরকার
বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর অনার্স সম্পর্কে অনেক রকমের ভুল ধারণা রয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী ভাবে রেজাল্ট ভালো না হলে অনার্সে পড়া যায় না। তাদের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। একজন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতকার্য হলেই সে অনার্সে আবেদন করার মাধ্যমে অনার্স করার সুযোগ পাবে। তবে ভালো কলেজে ভালো সাবজেক্টে পড়তে চাইলে অবশ্যই ভালো রেজাল্ট হওয়া প্রয়োজন। কারণ ভালো রেজাল্ট না হলে টপ লেভেলের সরকারি কলেজগুলোতে অনার্সে পড়ার সুযোগ পাওয়া যাবে না।
অন্যদিকে অনার্সে পড়তে চাইলে ভালো রেজাল্টই লাগবে এমন কোন ধরা বাধা নিয়ম নেই। একদম লাস্ট গ্রেডের রেজাল্ট নিয়েও অনার্সে পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়। তবে সেক্ষেত্রে পছন্দ মত সাবজেক্ট এবং ভালো কলেজ কখনোই পাওয়া যাবে না। বেসরকারি নিচের লেভেলের কলেজগুলোতে অনার্স করতে হবে। অতএব বুঝতে পেরেছেন এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করলেই
একজন শিক্ষার্থী অনার্সে আবেদন করতে পারবেন এবং আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে তার মেধা ও রেজাল্টের ভিত্তিতে যোগ্যতা অনুসারে কলেজ ও সাবজেক্ট পাবেন। অনার্স করার জন্য টপ লেভেলের রেজাল্ট লাগবে বা জিপিএ ৫ পেতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই।
অনার্স এবং ডিগ্রির মধ্যে পার্থক্য কি
অনার্স এবং ডিগ্রির মধ্যে সময় কম-বেশি এবং সাবজেক্টের বিষয়ে পার্থক্য রয়েছে। অনার্স করতে হয় নির্দিষ্ট একটি বিষয়ের উপর। অনার্স করতে সময় লাগে চার বছর। একজন শিক্ষার্থী চার বছর ধরে একটি বিষয়ের উপর বিস্তারিত পড়াশোনা করে অনার্স সম্পন্ন করেন। অন্যদিকে ডিগ্রী করতে হয় অনেকগুলো বিষয়ের সমন্বয়ে। ডিগ্রিতে একটি নির্দিষ্ট কোন বিষয় নেই। ডিগ্রি করতে সময় লাগে তিন বছর।
অর্থাৎ ডিগ্রির একজন শিক্ষার্থীকে তিন বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে হয়। যার ফলে নির্দিষ্টভাবে কোন এক বিষয়ের উপর অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান অর্জনের কোনো সুযোগ থাকে না। আবার অনার্স করলে চাকরির সুবিধা অনেক বেশি থাকে। যেকোনো চাকরিতেই আবেদন করার সুযোগ পাওয়া যায়।
কিন্তু ডিগ্রি করলে চাকরির সুবিধা ও সুযোগ অনেক কম থাকে। আবার অনেক চাকুরী রয়েছে যেগুলোতে ডিগ্রী সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীরা আবেদনই করতে পারে না। আশা করছি অনার্স এবং ডিগ্রির মধ্যে পার্থক্যটা আপনারা খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।
লেখকের মন্তব্য: আজকের আর্টিকেলে আমরা অনার্স এবং ডিগ্রির মধ্যে কি পার্থক্য রয়েছে সেটি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। পাশাপাশি এটিও বুঝিয়েছি যে আপনার জন্য অনার্স করলে ভালো হবে নাকি ডিগ্রি করলে ভালো হবে। আশা করছি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার ফলে আপনি বিষয়টি খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url