ছোট বাচ্চাদের মুখে ঘা কেন হয়-এর করণীয় কি
ছোট বাচ্চাদের মুখে ঘা কেন হয়, ছোট বাচ্চাদের মুখে ঘা হওয়ার কারণ হলো বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য নবজাতক শিশুর মুখে ঘা হলে তার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর। আপনারা হয়তো ছোট বাচ্চাদের মুখে ঘা হওয়ার সম্পর্কে সঠিক তথ্য খুঁজছেন। কিন্তু অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না।
তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে ছোট বাচ্চাদের মুখে ঘা হলে কি করনীয়, সেই সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পেজ সূচিপত্র: ছোট বাচ্চাদের মুখে ঘা কেন হয় এর প্রতিকার কি
আপনারা হয়তো ছোট বাচ্চাদের মুখে ঘা কেন হয়, জানার জন্য খুবই আগ্রহী। ছোট বাচ্চাদের মুখে ঘা হলে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। একজন নবজাতক শিশু মুখে ঘা হওয়ার জন্য দুধ পান করতে পারেনা। অনেক কান্নাকাটি করে যার প্রভাব বাচ্চাটির স্বাস্থ্যের উপর পরে এই জন্য আপনারা ছোট বাচ্চার মুখে খাওয়া হলে কি করনীয় সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। ছোট বাচ্চাদের মুখে ঘা হওয়ার বিভিন্ন ধরনের কারণ রয়েছে। অনেক বাচ্চার ক্ষেত্রে পুষ্টি জনিত কারণে মুখে ঘা হতে পারে।
বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের অভাবে মুখে ঘা হতে পারে। বিশেষ করে ভিটামিন সি এর অভাবে সমস্যা দেখা দেয়। গর্ভ অবস্থায় একজন মায়ের ভিটামিন সি এর অভাব এর জন্য নবজাতক বাচ্চার মুখে ঘাড়া দেখা দেয়। কি কি ওষুধ খেলে মুখের ঘা নিরাময় করা যাবে। বাচ্চার মায়ের কোন খাবার পরিহার করতে হবে।
কি কি খাবার খেলে বাচ্চার মুখের ঘা দ্রুত ভালো হয়ে যাবে। কি কি পুষ্টি জনিত খাবার মা খেলে বাচ্চার মুখের ঘা ভালো হয়ে যাবে। কি কি ভিটামিন খেলে বাচ্চার ঘা দূর হবে। আরো বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
মুখের ঘা এর জেলের নাম
মুখের ঘা দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের জেল বের হয়েছে বাজারে। কিন্তু বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সব ধরনের জেল ব্যবহার করা যাবে না। এতে বাচ্চার স্বাস্থ্য ঝুঁকি হতে পারে। বাচ্চাদের মুখে ঘা হওয়ার আরও একটি বিশেষ কারণ রয়েছে। বাচ্চাদের দুধ খাওয়ার ফলে জিব্বার ভিতরে এক ধরনের ছত্রাক সৃষ্টি হয়। যার মাধ্যমে ধীরে ধীরে বাচ্চাদের মুখে ঘা হয়। এইজন্য প্রত্যেকদিন বাচ্চার জিব্বা পরিষ্কার সুতি কাপড় নিয়ে সরিষার তেল দিয়ে মুখের সেই ছত্রাক পরিষ্কার করতে হবে।
আরো পড়ুন: ঘরোয়া ভাবে শরীরে এলার্জি দূর করার উপায়
অনেকে না জানার কারণে বাচ্চাদের মুখে ঘা হয়। তার জন্য আপনারা চাইলে ঘরোয়া ভাবে এই জেলগুলো ব্যবহার করলেন বাচ্চাদের মুখের ঘা নিরাময় করা যাবে। অ্যালোভেরা জেল দিনে দুইবার ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে ছত্রাকের ব্যাকটেরিয়া গুলো মরে যাবে। আপনারা চাইলে নারিকেলের তেল দিয়েও প্রতিদিন জিব্বা দুইবার করে মুছলে খুব দ্রুত মুখের ঘা নিরাময় হবে।
আরেকটি জেল রয়েছে এটি অবশ্যই কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে। মিকোনেল জেল মুখে দিয়ে খুব দ্রুত মুখের ঘা নিরাময় করা যায়। এই জেল খুব দ্রুত জিব্বার ছত্রাকগুলো ধ্বংস করে এবং জিব্বা এর ঘা দূর করে।
কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ঘা হয়
আপনারা হয়তো সবাই জানেন যে কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ঘা হয়। শরীরে পর্যাপ্ত পরিমান ভিটামিন না পেলে তখনই শরীরে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দেয়। বিশেষ করে ভিটামিনের অভাবে মুখেও ঠোঁটে ঘায়ের সৃষ্টি হয়। কারন আমরা ভিটামিন বিভিন্ন ধরনের খাবার থেকে পেয়ে থাকি। অনেক সময় আমরা সেইসব খাবার খাই না যেগুলোতে ভিটামিন রয়েছে যার ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ঘায়ের সৃষ্টি হয় । এইজন্য নিয়মিত ভিটামিন বি ভিটামিন সি ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার প্রত্যেকদিন খাবার তালিকায় রাখতে হবে।
এতে আমাদের শরীরে এই ভিটামিন গুলোর চাহিদা পূরণ হবে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ঘা সৃষ্টি হবে না। এইজন্য গর্ভাবস্থায় একজন মাকে বেশি বেশি পরিমাণ এই ভিটামিন যুক্ত খাবার গুলো খাওয়াতে হবে। তাহলে নবজাতক শিশুর ঠোঁটে বা জিব্বায় ঘা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক অংশে কমে যাবে। তাহলে চলুন জেনে নিন কোন কোন খাবারে ভিটামিন রয়েছে।
কমলা লেবু : এতে রয়েছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন সি। যা আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী। শরীরে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। ভিটামিন সি এর অভাবে শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোদ বাসাবাতে রোগ বাসা বাঁধে যেমন মুখে ঘা হয় ঠোঁটে ঘা হয়, শরীরে বিভিন্ন জায়গায় ঘা সৃষ্টি হয়। শরীরে কোন জায়গায় ক্ষত হলো তা সাড়তে অনেক সময় লাগে। এইজন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।
ভিটামিন ডি:ভিটামিন ডি এর অভাবে শরীরে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি হয়। ভিটামিন ডি এর অভাবে গ্রোথ হরমন বৃদ্ধি পায় না। এইজন শিশুর মস্তিষ্কের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। এতে শিশুর বিকাশ করতে বাধা দেয়। ভিটামিন ডি এর অভাবে গলাগন্ড রোগ হয়।এইজন্য প্রত্যেকদিন ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।
ভিটামিন বি১২:বিভিন্ন ধরনের সবুজ শাকসবজিতে ভিটামিন বি পাওয়া যায়। যা স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো কাজ করে। ভিটামিন বি এর অভাবেও শরীরে অনেক ধরনের রোগ সৃষ্টি হয়। এইজন্য খাবার তালিকায় প্রত্যেক দিন সবুজ শাকসবজি রাখতে হবে।
মুখের ভিতরে সাদা ঘা হলে করণীয় কি
মুখের ভিতরে সাদা ঘা হয় কারণ হলো ভিটামিনের অভাবে এ সমস্যাগুলো দেখা দেয়।এই সমস্যা ছোট বড় সবার ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। মুখে সাদা ঘায়ের কারণে কোন কিছু খাবার খাওয়া যায় না। অনেক জ্বালা পোড়া করে। ভিতরে এই সাদা ঘা দেখা যায় না কিন্তু খাবার সময় ঠিক ব্যথা করে আবার গিলতে বা চাবাতে গেলে। এজন্য মুখের ভেতরের সাদা ঘা দূর করতে হলে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণ পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। শরীরের সব রকম ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করতে হবে।
ঘরোয়া ভাবে মুখের ভিতরের সাদা ঘা দূর করার উপায় হল হালকা কুসুম পানি নিয়ে একটু নুন দিয়ে কয়েকবার কুলি করলে ধীরে ধীরে মুখের সাদা ঘা কমতে থাকবে। বেকিং সোডা মুখের ভিতরে সাদা ঘা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন। করে এক মগ হালকা গরম পানি নিয়ে এক থেকে দুই চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে কয়েকবার কুলকুচি করলে মুখের ভিতরের সাদা ঘা নিরাময় করতে সাহায্য করবে।
শরীরে জ্বালার্ড়া ভাব দূর করবে। আপনারা চাইলে অরজিনাল নারিকেলের তেলে তুলো ভিজিয়ে আপনার মুখের ভিতরে কয়েকবার আলতো হাতে মুছে দিলে এর ভেতরের ঘা ব্যথা জ্বালাপোড়া ভাব সহজেই নিরাময় কবে।মুখে ঘা কমানোর জন্য কয়েকদিন খাদ্যের তালিকা চেঞ্জ করতে হবে। যে খাবারগুলো আপনি খুব সহজেই খেতে পারবেন।
মুখের ভেতর সাদা ঘা হলে যে খাবারগুলো খেতে হবে, দই, আইসক্রিম, ঠান্ডা নরম খাবার, দুধ, ডিম ,চিপস,শরবত ইত্যাদি যে খাবার গুলো খুব সহজেই গলা দিয়ে ব্যাথা ছাড়াই নেমে যায় সেই খাবার গুলো খেতে হবে । এই নিয়ম অনুসারে চললে আপনার মুখের ভিতরে সাদা ঘা নিরাময় করা যাবে।
বাচ্চাদের গলায় ঘা হলে করণীয় কি
আমাদের গলায় ঘা হলে আমরা অনেক সমস্যায় থাকি। আমরা কিছুই খেতে পারি না।গিলতে গেলে অনেক ব্যথা জ্বালাপোড়া করে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও এমন হয় কিন্তু ওরা বলতে পারে না। এই জন্য শুধু কান্না করতে থাকে। আমরা অনেকেই বুঝতে পারি বাচ্চার কি হয়েছে আবার অনেকেই বুঝতে পারি না যে বাচ্চার কি হয়েছে। যারা বুঝতে পারে বাচ্চার কি হয়েছে। তারা দ্রুত বাচ্চার চিকিৎসা শুরু করে।মূলত এই সমস্যা হওয়ার কারণ ভিটামিন বি১২ এর অভাবে আমাদের গলায় ঘা ও ব্যথা হয়।
আরো পড়ুন: দাঁতের হলুদ ভাব দূর করার উপায় জেনে নিন
ভিটামিন বি ১২ কম হলে শরীরে বিভিন্ন জায়গায় ঘা ও ব্যাথা সৃষ্টি হয়।ঠোটে ঘা হয় মুখের ভিতরে গা হয় জিব্বা ফুলে যায় গলা ফুলে যায় গলা ব্যথা শুরু করে। বাচ্চার খাওয়ার প্রতি অরুচি সৃষ্টি হয়। এতে আরো বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগে আশঙ্কা বেড়ে যায়। বাচ্চাটির শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে।ভিটামিন বি১২ এর অভাবে গলগন্ড রোগ সৃষ্টি হতে পারে।
কিভাবে বুঝবেন ভিটামিন বি ১২ শরীরে থেকে দিন দিন কমে যাচ্ছে। শরীরের রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়, ধীরে ধীরে রক্তের কণিকা নষ্ট করে, খুব ক্লান্ত ভাব বা মাঝে মাঝে বমি অথবা ডায়রিয়া হতে পারে।এগুলো লক্ষণ দেখা দিলেই বুঝবেন যে আপনার শরীরে ভিটামিন বি ১২ অভাব রয়েছে।
বাচ্চাদের মুখের ঘা এর মলম
বড়দের মুখে ঘা হলে তারা বিভিন্ন উপায়ে বা বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেয়ে মুখের ঘা নিরাময় করে।কিন্তু ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে তো উচ্চ মাত্রার ওষুধ বা বিভিন্ন উপায়ে মুখের ঘা নিরাময় করা যাবে না। এজন্য বাচ্চাদের মুখের ঘা নিরাময় করতে মলম ব্যবহার করতে হবে। অ্যান্টি মাইক্রোরিয়াল মাউথ ওয়াশের মাধ্যমে বাচ্চাদের মুখ ধোয়ার কথা বলা হয়েছে।
নিয়মিত এভাবে মুখ ধুলে ধীরে ধীরে বাচ্চাদের মুখের ঘা ভালো হয়ে যাবে। আপনারা চাইলে ঘরোয়া ভাবে বাচ্চাদের মুখের ঘা নিরাময় করতে পারবেন ঘরোয়া কিছু উপাদানের মাধ্যমে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে এ উপাদান দিয়ে বাচ্চাদের মুখে ঘা নিরাময় করা যায়।
- নিয়মিত মধু খাওয়াতে হবে।
- দই দিয়ে মুখে ঘা নিরাময় করা যায়।
- অ্যালোভেরা জেল দিয়ে ঘা নিরাময় করা যায়।
- নারকেলের তেল দিয়ে মুখে ঘা নিরাময় করা যায়।
লেখক এর শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আপনারা হয়তো জেনে গিয়েছেন ঘরোয়া ভাবে বাচ্চাদের মুখের ঘা নিরাময় করা যায়। কোন ভিটামিনের অভাবে বাচ্চাদের মুখে ঘা হয়। বাচ্চাদের মুখের ঘা এর জন্য কোন ওষুধ খেতে হয়। বা কোন মলম ব্যবহার করতে হয়। কোন কোন খাবার খেলে মুখের ঘা থেকে নিরাময় পাওয়া যায়। আশা করছি ইতিমধ্যে সবকিছু জেনে গিয়েছেন। বাচ্চাদের মুখের ঘা নিরাময় করতে আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আশা করি আপনার উপকারে আসবে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ আমার সাথে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করতে পারেন। আরো এমন তথ্যমূলক আর্টিকেল পেতে আমার ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url