পুদিনা পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
পুদিনা পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানেন কি। পুদিনা পাতা শুধু স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়। তাছাড়াও ত্বক ও চুলের জন্য বেশ উপকারী। পুদিনা পাতা হলো খুব পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ভেষজ উদ্ভিদ।
কিভাবে পুদিনা পাতা খেলে এর সম্পূর্ণ পুষ্টি গুনাগুন পাওয়া যাবে। আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে পুদিনা পাতা খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ পুদিনা পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে
- পুদিনা পাতার উপকারিতা
- পুদিনা পাতা ক্ষতিকর দিক
- পুদিনা পাতা কিভাবে খাব
- ভুড়ি কমাতে পুদিনা পাতা খাওয়ার নিয়ম
- রূপচর্চায় পুদিনা পাতার ব্যবহার
- পুদিনা পাতার জুসের উপকারিতা
- রান্নায় পুদিনা পাতার ব্যবহার
- পুদিনা পাতা কোথায় পাওয়া যায়
- পুদিনা পাতার চায়ের উপকারিতা
- চুলের জন্য পুদিনা পাতার উপকারিতা
- পুদিনা পাতার তেল তৈরির নিয়ম
- পুদিনা পাতা চাষ পদ্ধতি
- পুদিনা পাতার বৈজ্ঞানিক নাম কি
- লেখক এর মন্তব্য পুদিনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে
পুদিনা পাতার উপকারিতা
বর্তমান সময়ে পুদিনার পাতার উপকারিতা সম্পর্কে হয়তো অনেকেই জানেন। খুব কম সংখ্যক মানুষ জানেন না পুদিনা পাতার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। পুদিনা পাতার সুমিষ্টি গন্ধের জন্য পরিচিত। বিভিন্ন ধরনের রান্নায় পুদিনা পাতার ব্যবহার করা হয়। পুদিনা পাতা নিয়ে দিন দিন গবেষণা বেড়ে চলেছে।পুদিনার পাতা রান্না করার ক্ষেত্রে বলেন বা স্বাস্থ্যের সুরক্ষার ক্ষেত্রে বলেন।পুদিনার পাতার পুষ্টিগুণের জুড়ি মেলা ভার। পুদিনা পাতায় রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুনা গুন।
ভিটামিন এ ভিটামিন সি ভিটামিন বি ৬ ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম আয়রন প্রোটিন ফাইবার খনিজ লবণ আরো ইত্যাদি পুষ্টিগুণ রয়েছে পুদিনা পাতায়। কিভাবে পুদিনা পাতা খেলে এই সকল পুষ্টিগুণ পাওয়া যাবে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক, পুদিনা পাতার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ আপনার কি দিন দিন স্মৃতি শক্তি লোভ পাচ্ছে। কোন কিছু মনে করতে পারছেন না। কোন জিনিস কোথায় রাখছেন মনে থাকছে না। তাহলে আজ থেকেই নিয়ম করে পুদিনার পাতা খেতে পারেন। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে পুদিনার পাতা বিশেষ ভূমিকা করে। পুদিনা পাতায় রয়েছে বিশেষ পুষ্টিগুণ যার মাধ্যমে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বেড়াতে সহায়তা করে। তাহলে দেরি না করে আজ থেকে পুদিনা পাতা নিয়মিত খেতে পারেন। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ পুদিনা পাতা নিয়ে যতই বলি না কেন, মনে হয় এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে কম বলা হয়েছে। পুদিনা পাতা এমন একটি ভেষজ ঔষধ অনেকে জানে না।নিয়মিত পুদিনা পাতা খেলে ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি রোগ নিরাময় করতে সাহায্য করে।
দাঁত ভালো রাখেঃ পুদিনা পাতা রয়েছে গন্ধি যা শুধু রান্না করে খেলে শরীরে পুষ্টি পাওয়া যায় না।বরং খালি পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন।তাহলে দাঁতের খুব উপকার হয়। আমাদের খাবার খাওয়ার ফলে দাঁতের বিভিন্ন ধরনের খাবার আটকে ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি হয় যা পুদিনা পাতা খেলে ব্যাকটেরিয়া নিমিষে ধ্বংস করে। এতে সুরক্ষা থাকি।
পিরিয়ডের ব্যথা দূর করেঃ প্রত্যেকটা মা-বোনেরাই জানে পিরিয়ডের সময় প্রচন্ড ব্যথা হয়। কিন্তু পুদিনা পাতার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে হয়তো না। সময় পুদিনার পাতার রস খেলে এক নিমিষে সেই তীব্র ব্যথা দূর হয়ে যায়। পেটের জ্বালাপোড়া ভাব দূর হয়।শরীরে বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা হলেও পাতার রস লাগাতে পারেন। খুব দ্রুত ব্যথা কমে যাবে।
অনিদ্রা দূর করেঃ আপনারা হয়তো জানেন না পুদিনা পাতা একটি ক্যাইফেন মুক্ত ভেষজ উপাদান। যা ঘুমের জন্য খুব উপকারী। নিয়মিত পুদিনা পাতা খেলে আপনার মাথা শীতল থাকবে। যারা অনিদ্রতায় ভুগছেন, প্রত্যেকদিন রাতে ঘুমানোর আগে পুদিনা পাতা খেলে খুব ভালো খুব হবে।
পেটের সমস্যা দূর করেঃ নিয়মিত পুদিনার পাতা খেলে আপনার পচনতন্ত্র খুব ভালো কাজ করবে। অনেক সময় খাবার খাওয়ার পরে পেট ব্যথা জ্বালাপোড়া গ্যাস সৃষ্টি হয় নিয়মিত পুদিনার পাতা খেলে আপনার পেট পরিষ্কার থাকবে।এইজন্য পেটে সমস্যা দূর করতে নিয়মিত পুদিনা পাতা খেতে পারেন।
শ্বাস যন্ত্রের সমস্যা দূর করেঃ নিয়মিত পুদিনা পাতা খেলে শ্বাসকষ্ট, নাক বন্ধ হওয়া অ্যাজমা সমস্যা দূর করে পুদিনা পাতা।
মাইগ্রেনের ব্যথা দূর করেঃ বর্তমান সময়ে মাইগ্রেনের ব্যথায় অনেকেই ভুগছেন অনেক কিছু করেও এ ব্যথা দূর করা সম্ভব হয়নি। আপনারা চাইলে নিয়মিত পুদিনা পাতা সেবন করতে পারেন। নিয়মিত পুদিনা পাতা খাওয়ার ফলে মাইগ্রেনের ব্যথা দূর করতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। কারণ পুদিনা পাতায় রয়েছে ইনফোমট্রি গুণ মাইগ্রেনের ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে। পুদিনা পাতায় রয়েছে এক ধরনের সুখগন্ধি যা মাইগ্রেনের ব্যাথা দূর করতে খুব কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
ওজন কমাতে পুদিনা পাতাঃ আপনি যদি ওজন কমাতে চান। বা ওজন নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তাহলে আজ থেকেই নিয়ম করে পুদিনা পাতা খেতে পারেন। কারণ পুদিনা পাতায় রয়েছে মেটাবলিজম এর উপাদান যার শরীর থেকে অতিরিক্ত চর্বি ঝরিয়ে ওজন কমাতে করে। নিয়ম করে পুদিনা পাতা খেলে খুব সহজেই ওজন কমাতে পারবেন।
ত্বকের যত্নে পুদিনা পাতাঃ আপনারা হয়তো জানেন না যে ত্বকের জন্য বেশ উপকারী। পুদিনা পাতা ত্বকের পাঙ্গাস ব্যাকটেরিয়া দূর করে। মুখে ব্রণ বা এলার্জির সমস্যা দূর করে। এইজন্য পুদিনার পাতা মিক্স করে। ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। খুব ভালো উপকার পাওয়া যায়।
চুলের যত্নঃ পুদিনা পাতা শুধু ত্বকের যত্নেই নয়। বরং চুলের যত্নেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত পুদিনার পাতা চুলে ব্যবহার করলে চুলের গোড়া শক্ত মজবুত হয়। চুল পড়া বন্ধ হয়। নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করেঃ আপনারা যদি কোলেস্টরেলের রোগে ভুগে থাকেন। তাহলে অবশ্যই আজ থেকে পুদিনা পাতা নিয়মিত খেতে পারেন। এতে আপনার কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখবে। হৃদরোগের ঝুঁকি কমাবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ পুদিনা পাতায় রয়েছে ভিটামিন সি আরো বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি গুনাগুন যার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সতেজ ও এনার্জি ফুল রাখে। পুদিনা পাতা নিয়মিত খাওয়ার ফলে সর্দি কাশি থেকে নিরাময় পাওয়া যায়। শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। এইজন্য শরীরে কোন রোগ ব্যাধি বাসা বাঁধতে পারে না।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ পুদিনা পাতা নানা জীবন সম্পন্ন ভেষজ উদ্ভিদ। এই পাতা নিয়মিত খাওয়ার ফলে মানসিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। মানসিক সমস্যার কারণে মানুষের ব্লাড প্রেসার বৃদ্ধি পায়। এতে উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি হয়। এইজন্য নিয়ম করে আপনারা পুদিনা পাতা খেতে পারেন রক্তচাপ থেকে নিরাময় পেতে।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করেঃ পুদিনা পাতা বিশেষ সুগন্ধি যার মাধ্যমে মুখের দুর্গন্ধ নিমিষে দূর হয়ে যায়। অনেকের আবার গলা ব্যথা মুখে ব্যথার সমস্যা রয়েছে। নিয়মিত পুদিনা পাতা সেবন করলে এ সকল সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।
পুদিনা পাতা ক্ষতিকর দিক
যেকোনো খাদ্য প্রয়োজনের অধিক পরিমাণ খেলে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। পুদিনা পাতা খাওয়ার যেমন উপকারিতা রয়েছে। তেমনি পুদিনা পাতা খাওয়ার ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। পুদিনা পাতা খেলে কি কি ক্ষতি হয় আজকে আমরা এ সম্পর্কে জানাবো। তাহলে চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
- শিশুদেরকে অতিরিক্ত পুদিনা পাতা খাওয়ালে শিশুর শ্বাসকষ্ট অথবা গলা জ্বালা করতে পারে।
- পুদিনা পাতা খেলে যেমন মূএ-বর্ধন হিসাবে কাজ করে। তেমনি অতিরিক্ত পুদিনা পাতা খাওয়ার ফলে মূএ-বর্ধন জ্বালা ভাব এবং ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে।
- যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে অতিরিক্ত পুদিনা পাতা খাওয়ার ফলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে।
- আপনারা হয়তো অনেকে জানেন যে পুদিনা পাতা রক্তচাপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এই জন্য অতিরিক্ত পুদিনা পাতা খাওয়ার ফলে রক্তচাপ কমে যাবে। যার ফলে আপনার মাথা ঘোরা ও শরীর দুর্বলতা সৃষ্টি হবে।
- প্রয়োজনের অধিক পরিমাণ পুদিনা পাতা খেলে চোখে দৃষ্টি শক্তি লোপ পেতে পারে। বিশেষ করে যাদের চোখের সমস্যা আগে থেকেই রয়েছে, তাদের পুদিনা পাতা খাওয়া পরিহার করতে হবে।
- অতিরিক্ত পুদিনা পাতা খেলে গ্যাস ও অম্বল হতে পারে। আবার পুদিনা পাতা বেশি পরিমাণ খেলে পেটে প্রদাহ সৃষ্টি হয়।
- গর্ভবস্থায় অতিরিক্ত পুদিনা পাতা খাওয়া উচিত নয়। এতে আপনার গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়। কারণ অতিরিক্ত পুদিনা পাতা খেলে জরায়ু দুর্বল হয়ে পড়ে।
- বেশি পরিমাণ পুদিনা পাতা খেলে শরীরে এলার্জির সমস্যা দেখা দেয়। যাদের আগের থেকে এলার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের পুদিনা পাতার না খাওয়াই ভালো। পুদিনা পাতায় এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যা এলার্জির মাত্রা কে অনেক গুণে বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও অধিক পরিমাণে পুদিনা পাতা খাওয়ার ফলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
পুদিনা পাতা কিভাবে খাব
- পুদিনা পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। কিভাবে পুদিনা পাতা খেতে হয়। কোন নিয়ম অনুসরণ করে পুদিনা পাতা খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। পুদিনা পাতা খেয়ে সর্বাধিক উপকারিতা কিভাবে পাবেন এই সম্পর্কে এখন আমরা আলোচনা করব। কিভাবে পুদিনা পাতা খাবেন চলুন জেনে নিন।
- সকালের খালি পেটে পুদিনা পাতা চিবিয়ে খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। এইজন্য ভালো উপকার পেতে আপনারা সরাসরি পুদিনা পাতা চিবিয়ে খাবেন।
- আপনারা চাইলে পুদিনা পাতা রস করে খেতে পারেন। পুদিনা পাতার রস মানব দেহের জন্য খুব উপকারী একটি উপাদান।
- পুদিনার পাতা যে কোন সালাদের সাথে খেতে পারেন। পুদিনা পাতা কুচি কুচি করে কেটে সালাদের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে সালাদের টেস্ট অনেক বেড়ে যায়। এভাবে পুদিনা পাতার সালাদের সাথে খেলে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।
- আপনারা অবশ্যই সতেজ পুদিনা পাতা খাওয়ার চেষ্টা করবেন। কারণ শুকনো পুদিনা পাতা অথবা প্যাকেটিং পুদিনা পাতা খেলে কম পুষ্টি পাবেন। এজন্য তরতাজা সতেজ পুদিনা পাতা খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
- আপনারা হয়তো জুস খেতে পছন্দ করেন। এই জুসের মধ্যে পুদিনা পাতার রস জুসের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে আপনার জুসের পুষ্টিগুণ আরো বাড়িয়ে তুলে।
- আপনারা চাইলে পুদিনা পাতা শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে পারেন। পুদিনা পাতার গুঁড়ো রান্নার মসলা হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন, এতে রান্নার স্বাদ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে।
- অনেক সময় মাংস রান্না করতে গিয়ে মাংসে তেলের পরিমাণ একটু বেশি হয়ে যায়। তখন আপনারা পুদিনার পাতা ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার মাংসের তেল তেলে ভাব কমে যাবে, মাংসের স্বাদ বৃদ্ধি পাবে।
- বর্তমান সময়ে কম-বেশি সবাই চা খান, আপনারা চাইলে পুদিনা পাতা গরম পানিতে ভিজিয়ে চায়ের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন এতে স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী।
ভুড়ি কমাতে পুদিনা পাতা খাওয়ার নিয়ম
পুদিনা পাতার রসঃ ভুড়ি কমাতে পুদিনার পাতা খুব কার্যকারী একটি উপাদান। প্রত্যেকদিন সকালে খালি পেটে পুদিনা পাতা রস করে খেলে আপনি খুব সহজেই পেটের ভুড়ি কমাতে পারবেন। পুদিনা পাতার রস কিভাবে তৈরি করবেন ভাবছেন। পুদিনা পাতা কুচি কুচি করে কেটে নিবেন, তারপরে হাফ লিটার পানিতে সারারাত ধরে ভিজিয়ে রাখবেন সকালে খালি পেটে ওই পানি এক গ্লাস পরিমাণ খাবেন, ৩০ মিনিট পরে আবার বাকি পানিটুক খাবেন। এই নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদিন খালি পেটে পুদিনা পাতা খেলে খুব তাড়াতাড়ি ভুড়ি কমানো যাবে।
আরো পড়ুনঃ মাশরুমের পুষ্টি গুনাগুন সম্পর্কে জেনে নিন
দই ও পুদিনার মিশ্রণঃ ভুড়ি কমাতে দই ও খুব ভালো কাজ করে। কিন্তু ভুড়ি কমানোর জন্য মিষ্টি দই খাওয়া যাবেনা। মিষ্টি দই এর পরিবর্তে টক দইয়ের সাথে পুদিনা পাতা কুচি কুচি করে কেটে নিয়ে ভালোভাবে মিক্স করে, নিয়মিত খেলে অতিরিক্ত পেটের ভুড়ি কমাতে সহায়তা করবে।
পুদিনা পাতার চাঃ খুব কম মানুষই রয়েছে যে চা পছন্দ করেনা। আপনারা তো প্রত্যেকদিন চা খান কিন্তু ভুড়ি কমাতে পুদিনা পাতার রস চায়ের সাথে মিক্স করে খেলে খুব সহজে ভুড়ি কমানো যাবে। পুদিনা পাতার চা বানাতে হলে গরম পানির মধ্যে পুদিনা পাতা দিয়ে কয়েক মিনিট জ্বাল করে ছেঁকে নিলেই পুদিনা পাতা চা রেডি হয়ে যাবে। আর অবশ্যই পুদিনা পাতা চায়ে সঙ্গে চিনি ব্যবহার করা যাবে না।
রূপচর্চায় পুদিনা পাতার ব্যবহার
পুদিনা পাতা রূপচর্চায় কিভাবে ব্যবহার করবেন অনেকেই এ বিষয়ে জানতে চান। পুদিনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা বিভিন্ন ধরনের রয়েছে। কিন্তু কিভাবে পুদিনা পাতা দিয়ে রূপচর্চা করবেন। যাদের ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ব্রণ, মেছতা কালো ছোপ ছোপ দাগ দূর করতে পুদিনা পাতা বিশেষ কার্যকর ভূমিকা রাখে। কিন্তু আপনারা হয়তো ভাবছেন যে পুদিনা পাতা কিভাবে ত্বকে ব্যবহার করবেন তাহলে চলুন পুদিনা পাতার ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নিন।
ত্বক পরিষ্কার করতে পুদিনা পাতার ব্যবহারঃ অনেকের মুখে প্রচুর পরিমাণ লোম থাকায় বিভিন্ন ধরনের ফেসওয়াশ ব্যবহার করেও মুখ পরিষ্কার হয় না। মুখ পরিষ্কার রাখতে পুদিনা পাতা বেশ কার্যকরী উপাদান। পুদিনা পাতার খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করে বেটে নিয়ে মুখের লোম স্থানে ভালোভাবে লাগাতে হবে। হালকা হাতে মেসেজ করে ২০ মিনিট রেখে নরমাল পানিতে ধুয়ে নিলেই মুখ পরিষ্কার হয়ে যাবে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতেঃ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে পুদিনা পাতার বিশেষ ভূমিকা পালন করে পুদিনা পাতার রসের সঙ্গে টমেটোর রস ও টক দই একসাথে মিক্স করে মুখে লাগালে আপনার মুখের হারানো উজ্জ্বলতা খুব দ্রুত ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
ত্বকের ক্ষত নিরাময় করতে পুদিনা পাতার ব্যবহারঃ অনেক মানুষের অতিরিক্ত ব্রনের কারণে ত্বকের ক্ষত সৃষ্টি হয় পুদিনা পাতা ক্ষত সারাতে বেশ উপকারী। কারণ পুদিনা পাতায় রয়েছে এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান যা খুব সহজেই শরীরের বিভিন্ন জায়গার ক্ষত সারাতে ভূমিকা পালন করে।
ত্বক ঠান্ডা রাখতে পুদিনা পাতার ব্যবহারঃ অতিরিক্ত গরমের কারণে অনেকের ত্বকে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হয় পুদিনা পাতার বেটে মুখে দিলে বা সেই জ্বালাপোড়া স্থানে লাগালে খুব সহজেই সেই স্থান শীতল হয়। অনেকের আবার বিভিন্ন ধরনের ক্রিম ইউজ করার ফলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়। ত্বকে প্রচন্ড জ্বালা পড়া হতে থাকে, তখন পুদিনা পাতা পেস্ট মুখে লাগালে মুখ ঠান্ডা হয়।
ত্বকের বলি দেখা দূর করতে পুদিনা পাতাঃ অনেকের বয়স না হওয়ার সত্ত্বেও ত্বকে বলি দেখা সৃষ্টি হয়। এজন্য পুদিনা পাতা বেটে ওই পেস্ট মুখে লাগালে এক নিমিষেই মুখের বলিরেখা দূর হয়ে যায়।
ত্বকের ব্রণ দূর করতে পুদিনা পাতাঃ অনেকের মুখে অতিরিক্ত তেল উঠার কারনে মুখে প্রচন্ড ব্রণ হয় আর এই ব্রণ নিরাময় করতে পুদিনা পাতার বেশ উপকার করে। পুদিনা পাতার পেস্ট ব্রণ হওয়ার স্থানে ভালোভাবে লাগিয়ে শুকানোর আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করে নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এভাবে সপ্তাহে দুইবার করলে খুব তাড়াতাড়ি ব্রণ নিরাময় করা যাবে।
ত্বকে ডার্ক সার্কেল দূর করতে পুদিনা পাতার ব্যবহারঃ অনেকের পড়াশোনা অথবা অন্যান্য কারণে জন্য চোখের নিচে ত্বকে ডার্ক সার্কেল পড়ে। এই ডার্ক সার্কেল নিরাময় করতে পুদিনা পাতার বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। পুদিনা পাতার পেস্ট চোখের নিচে ভালোভাবে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে। নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে নিবেন, তাহলে কয়েকদিনের মধ্যেই চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল নিরাময় করা যায়।
পুদিনা পাতার জুসের উপকারিতা
পুদিনার পাতার উপকারিতা বাড়াতে ও অপকারিতা দূর করতে আপনি পুদিনা পাতার জুস বানিয়ে খেতে পারেন পুদিনা পাতার জুস ও স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। আপনারা চাইলে যে কোন ফলের রসের সাথে পুদিনা পাতার রস মিশিয়ে জুস বানিয়ে খেতে পারেন এটিও শরীরের জন্য খুব উপকার করে। এবার চলুন পুদিনা পাতার জুস খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
- নিয়মিত পুদিনা পাতার জুস খেলে আপনার পেটের জন্য বেশ উপকারী। কারণ পুদিনা পাতার জুস খেলে পেট ঠান্ডা রাখে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
- সর্দি কাশি হলে পুদিনা পাতার জুস খান , যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত পুদিনা পাতার জুস খেতে পারেন এতে আপনার শ্বাসকষ্টে নিরাময় হবে।
- নিয়মিত পুদিনা পাতার জুস খেলে খুব সহজে পেটের চর্বি ঝড়ে। শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরে ওজন কমায়।
- পুদিনা পাতা শুধু শরীরের মেদ ছড়ায় না নিয়মিত পুদিনা পাতার জুস খেলে আপনার খাবারের চাহিদা অনেক কমিয়ে দেয় এতে ওজন কমাতে বেশি উপকার হয়।
- যারা ডিপ্রেশনে ভুগছেন নিয়মিত পুদিনা পাতার জুস খেতে পারেন। পুদিনা পাতার সুগন্ধির কারণে আপনার মস্তিষ্ক সতেজ ও তরতাজা হবে এতে আপনার মনোরোগ দূর হবে।
- নিয়মিত পুদিনা পাতার জুস খেলে আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করবে। পুদিনা পাতায় রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, যার ফলে কোন ধরনের রোগব্যাধি শরীরে বাসা বাঁধতে পারবে না।
- পুদিনা পাতার জুসের মধ্যে রয়েছে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের এলার্জির সমস্যা কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
- পুদিনা পাতার জুস খেলে আপনার শরীরে যেকোনো ধরনের ইনফেকশন সৃষ্টি হবে না।
- পুদিনা পাতার জুস নিয়মিত খেলে শরীরের রক্ত পরিষ্কার রাখে।
- গর্ভবস্থায় একটা মায়ের দুর্বলতা ক্লান্তি ভাব আসে নিয়মিত পুদিনা পাতার জুস খেলে দুর্বলতা দূর হয়। শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এই জন্য গর্ভবস্থায় হবু মায়ের প্রত্যেকদিন সকালে এক ক্লাস পুদিনা পাতার জুস খাওয়া উচিত।
রান্নায় পুদিনা পাতার ব্যবহার
পুদিনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা ইতিমধ্যে জেনে গিয়েছেন। কিন্তু পুদিনা পাতা রান্না করে খেলেও সমানভাবে উপকারিতা পাওয়া যায়। কারণ পুদিনা পাতা এমন একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার পুষ্টি গুনাগুন অনেক পুদিনা পাতা বিভিন্ন উপায়ে বিভিন্নভাবে আপনারা খেতে পারবেন। বিভিন্ন ধরনের রান্নায় পুদিনা পাতা একটি সুগন্ধি হিসাবে ব্যবহার করা হয়। পুদিনা পাতা খাবারে যেমন সুগন্ধি এনে দেয়।
তেমনি খাবারে দ্বিগুণ স্বাদ বৃদ্ধি করে, এই জন্য দিন দিন পুদিনা পাতা বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে, আর এর পুষ্টির গুনাগুন সবার উপরে রয়েছে। আজকে আমরা পুদিনা পাতা কিভাবে রান্না করে খেতে হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো চলুন প্রিয় পাঠক তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
- আপনারা তো রান্নায় বিভিন্ন ধরনের মসলা ব্যবহার করেন, তেমনি পুদিনা পাতা ভালোভাবে শুকিয়ে গুড়ো করে সংরক্ষণ করে রেখে সেগুলো মসলা হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এভাবে রান্না করলে খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি পাবে, এবং সমানভাবে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করবে।
- বিভিন্ন ধরনের খাবার যেমন বিরিয়ানি, রোস্ট, কারি, ফ্রাই রাইস, এ পুদিনা পাতা মসলা হিসেবে ব্যবহার করলে খাবারের স্বাদ আরো বেড়ে যাবে।
- আপনারা চাইলে বিভিন্ন ধরনের চাটনি আচার তৈরিতে পুদিনা পাতা মসলা ব্যবহার করতে পারেন এতে চাটনি আচার খেতে আরো সুস্বাদু হবে।
- বিভিন্ন ধরনের সালাদের সাথে পুদিনা পাতা মসলা সালাদের উপর ছিটিয়ে দিলে খেতে দারুন মজা হবে।
- অনেক ধরনের মানুষের সাথে পুদিনা পাতার মসলা দিয়ে রান্না করবেন এতে মাংসের স্বাদ অনেক গুণ বৃদ্ধি পাবে।
- যেকোনো ধরনের চায়ের সঙ্গে পুদিনা পাতার মসলা মিশিয়ে চা তৈরি করে খেতে পারেন।
- পুদিনা পাতার মসলা দিয়ে জুস বানিয়ে খেলে আপনি জীবনেও এই জুসের কথা বলতে পারবেন না এতটাই সুস্বাদু খেতে হবে।
- আপনি চাইলে বিভিন্ন ধরনের সুপ ও থাই স্যালেটের সাথে পুদিনা পাতার মসলা ব্যবহার করতে পারেন এতে খাবারের পুষ্টিগুণ বাড়িয়ে তুলবে।
পুদিনা পাতা কোথায় পাওয়া যায়
প্রিয় পাঠক আপনারা পুদিনা পাতা কিভাবে খেলে উপকার পাওয়া যায় কখন খেতে হবে আপনারা হয়তো এ বিষয়ে ইতিমধ্যে জেনে গিয়েছেন। আর সবার মনে একটাই প্রশ্ন যে পুদিনা পাতা কোথায় পাওয়া যায়। আর নয় চিন্তা আপনি খুব সহজেই আপনার নিত্যদিনের বাজারে পুদিনার পাতা পেয়ে যাবেন।
অথবা বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ধরনের অনলাইন সাইডে পুদিনা পাতা পেয়ে যাবেন। পুদিনা পাতার বিশেষ পুষ্টি গুণ রয়েছে বলে পুদিনা পাতার বাজারে অনেক চাহিদা রয়েছে। আপনিও চাইলে খুব সহজেই বাজার বা অনলাইনে ই-কমার্স সাইট থেকে পুদিনা পাতা সংরক্ষণ করতে পারেন।
পুদিনা পাতার চা এর উপকারিতা
পুদিনা পাতা খেয়ে পুষ্টিগুণ পেতে এবং অপকারিতা এড়াতে নিয়মিত পুদিনা পাতার চা বানিয়ে খেতে পারেন। পুদিনা পাতার চা স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। পুদিনা পাতা সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণ পেতে আপনারা সতেজ তরতাজা পুদিনা পাতা চা খেতে পারেন। এতে শরীরের বিভিন্ন অংশের ব্যথা সর্দি কাশি এলার্জির সমস্যা খুব সহজে নিরাময় করবে। শরীরের বিভিন্ন জায়গার ক্ষত নিরাময় করতে সাহায্য করে। পুদিনা পাতায় বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে।
এজন্য দাঁতের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করে মুখের দুর্গন্ধ দূর করে। ত্বকের তেলতেলে ভাব শুষ্কতা বলিরেখা ডার্ক সার্কেল দূর করতে বেশ কার্যকরী। এই জন্য নিয়মিত আপনারা পুদিনা পাতার চা খেতে পারেন। বর্তমান সময়ে খুব কম মানুষের রয়েছে চা পছন্দ করেনা। প্রতিদিনই তো চা খান তাহলে পুদিনা পাতার চা খেলে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। অনেকে সারাদিনের কাজকর্মের জন্য খুব ক্লান্ত ভাব এবং শরীর দুর্বল দেখায় নিয়মিত পুদিনা পাতার চা খেলে দুর্বলতা দূর হবে।
মাথা ব্যথা ও গলা ব্যথা অনেকের আবার শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা রয়েছে এগুলো নিরাময় করবে পুদিনা পাতার চা। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে, পুদিনা পাতার চা খাওয়ার ফলে ঘুম খুব ভালো হয়, শরীরের মেদ ঝরিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে, শরীরে সকল ধরনের সমস্যা দূর করতে একমাত্র পুদিনা পাতার চা পারে। পুদিনা পাতার জরি মেলা ভার, এই জন্য আপনারা প্রতিদিন নিয়ম করে পুদিনা পাতার চা খেতে পারেন। নিয়মিত চা খেলে আপনার শরীর সুস্থ সবল থাকবে।
চুলের জন্য পুদিনা পাতার উপকারিতা
পুদিনা পাতা শুধু ত্বকের জন্য উপকারী নয় বরং পুদিনা পাতা চুলের জন্য বেশ উপকারী। নিয়মিত পুদিনা পাতা চুলে ব্যবহার করলে চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে নিরাময় পাওয়া সম্ভব। অনেক সময় আমরা চুল পড়া নিয়ে খুব সমস্যায় পড়ে থাকি। এই সমস্যা থেকে নিরাময় পেতে নিয়মিত পুদিনা পাতা পেস্ট বানিয়ে চুলের গড়ায় লাগিয়ে কিছু সময় রেখে ধুয়ে নিন এতে চুল পড়া বন্ধ হবে। পুদিনা পাতার রস ব্যবহার করার ফলে চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।, মাথার বিভিন্ন ধরনের ফাঙ্গাস ব্যাকটেরিয়া পুদিনা পাতা ব্যবহার করার ফলে সেগুলো জীবাণুন গুলো ধ্বংস হয়ে যাবে।
পুদিনা পাতার পেস্ট ব্যবহার করার ফলে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে। চুলের খুশকি দূর হবে। অনেক সময় মাথা অতিরিক্ত গরম হওয়ার কারণে চুল ঝরে পড়ে পুদিনা পাতা ব্যবহার করার ফলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে এতে চুল মসৃণ সুন্দর হবে। চুলের তেল তেলে ভাব দূর হবে পুদিনা পাতার পেস্ট ব্যবহার করার ফলে। স্বাস্থ্য উজ্জ্বল চুল পেতে পুদিনার পাতা পেস্ট নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন।
পুদিনা পাতার তেল তৈরির নিয়ম
অনেকেই পুদিনা পাতার পেস্ট মাথায় ব্যবহার করতে বিরক্ত বোধ করেন এই জন্য খুব সহজেই পুদিনা পাতার তেল বানিয়ে মাথায় লাগিয়ে মাথার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে পারবেন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক পুদিনা পাতার তেল বানানোর উপকরণ সম্পর্কে।
- প্রথম ধাপঃ অবশ্যই আপনাকে ১০০ গ্রাম ফ্রেশ তরতাজা পুদিনা পাতা নিতে হবে এবং পরিষ্কারভাবে পাতাগুলো ধুয়ে নিন।
- দ্বিতীয় ধাপঃ এরপরে আপনাকে ভার্জিন নারিকেলের তেল অথবা ক্যাস্টর অয়েল এক কাপ নিতে হবে। আপনারা চাইলে এর মধ্যে আরও বেশ কিছু উপকরণ মিক্স করতে পারেন।
- তৃতীয় ধাপঃ তারপরে একটি পাতিলে তেল গুলো দিয়ে গরম করে ওর মধ্যে পুদিনা পাতা দিয়ে বেশ কিছু কিছু ভুল জাল করে নিন, তারপরে ঠান্ডা হলে পরিস্কার নরম কাপড় দিয়ে তেলটি ছেঁকে একটি কাঁচের বোতলে বায়ু রোধ করে সংরক্ষণ করতে পারেন। এই তেল আপনি প্রতিদিন ঘুমানোর আগে মাথায় হালকা হাতে মাসাজ করলে আপনার ঘুম ভালো হবে। আর এই তেলটি এক মাসের বেশি সংরক্ষণ থাকবে না।
- চতুর্থ ধাপঃ আর অবশ্যই এই তেলটি আপনি ফ্রিজে সংরক্ষণ করলে ভালো ফলাফল পাবেন চলে সকল সমস্যা সমাধান পেতে নিয়মিত পুদিনা তেল ব্যবহার করতে পারেন।
পুদিনা পাতা চাষ পদ্ধতি
পুদিনা পাতার উপকারিতার জন্য অনেকেই পুদিনা পাতা চাষ করতে চান এবং পুদিনা পাতা কিভাবে চাষ করতে হয় অনেকে জানতে চেয়েছেন পুদিনা পাতা বিশেষ পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ভেষজ উদ্ভিদ। এই জন্য বাজারে পুদিনা পাতার চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলেছে আপনিও চাইলে বাসায় পুদিনা পাতা চাষ করতে পারেন তাহলে চলুন জেনে নিন কিভাবে পুদিনা পাতা চাষ করবেন।
- প্রথম ধাপঃ অবশ্যই প্রথমে আপনাকে মাটি নির্বাচন করতে হবে মাটি নির্বাচন ভালো না হলে পুদিনা পাতা চাষ করা খুব একটা সুবিধা পাওয়া যাবে না। অবশ্যই দোআঁশ মাটি বাছাই করতে হবে ২ কেজি গোবর, ফেলে দেওয়া কিছু পঁচা পাতা ও আমরা নিত্যদিনে যে চা খাই এর ফেলে দেওয়া চাপাতি নিয়ে একসাথে মিক্স করে কিছুদিন থেকে রাখতে হবে তাহলে মাটি রেডি হবে।
- দ্বিতীয় ধাপঃ টপ নির্বাচন করতে হবে আপনারা চাইলে শুধু মাটিতেও লাগাতে পারবেন। কিন্তু টপে পুদিনা পাতা চাষ করলে একটু ভালো ফলন পাওয়া যায়। টপের গভীরতা ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি হতে হবে এবং প্রস্থ ১২ থেকে ১৪ ইঞ্চি হতে হবে তাহলে পুদিনা গাছের শিকড় গুলো ভালোভাবে বলতে পারবে এতে পুদিনা পাতা খুব ভালো হবে।
- তৃতীয় ধাপঃ এর পরে পুদিনা পাতার বীজ রপন করতে হবে, অথবা আপনারা চাইলে যে কোনো ধরনের নার্সারি থেকে পুদিনা পাতার চারা কিনতে পারবেন। পুদিনা পাতার একটি চারা কিনে নিয়ে আসলেই আপনার আর পরবর্তীতে কোন চারা কিনতে হবে না। কারণ পুদিনা গাছের ডাল পরবর্তীতে অন্য কোন টপে লাগিয়ে দিলে কয়েক দিনের মধ্যেই পুদিনা পাতায় ভরপুর হয়ে যায়। আপনি চাইলে প্রথম পর্যায়ে ও পুদিনা গাছের ডাল সংরক্ষণ করে লাগাতে পারেন।
- চতুর্থ ধাপঃ এরপরে পুদিনা গাছের পরিচর্যা করতে হবে নিয়মিত পুদিনা গাছে গোবর সার দিতে হবে। গাছের গোড়ায় যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আদ্রতা ঠিক আছে নাকি সেদিকে দেখতে হবে। গাছের আগাছা পরিষ্কার করতে হবে তাহলে খুব সহজে পুদিনা পাতা পাওয়া যাবে।
- পঞ্চম ধাপঃ কিছুদিনের মধ্যেই পুদিনা গাছটি খুব তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পাবে ৫ থেকে ৮ ইঞ্চি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথেই গাছের শাখা-প্রশাখা কেটে ছোট করতে হবে এতে গাছ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এরপরে আপনি চাইলে পুদিনা গাছের পাতা সংরক্ষণ করতে পারেন। আর অবশ্যই বাহিরের শাখা প্রশাখার পাতাগুলো সংরক্ষণ করাই ভালো এতে গাছের কোনরকম ক্ষতি হবে না।
পুদিনা পাতার বৈজ্ঞানিক নাম কি
পুদিনা পাতার বিশেষ উপকারীর জন্য এর বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে এই পুদিনা পাতা কে চিনে থাকে। কিন্তু পুদিনা পাতার বৈজ্ঞানিক নামও রয়েছে তাহলে চলুন পুদিনা পাতার বৈজ্ঞানিক নাম জেনে আসি। Mentha Spicata এই নামে বৈজ্ঞানীরা পুদিনা পাতা কে বিবেচিত করেছে। পুদিনা পাতার ইংরেজি নামও রয়েছে Mint।
পুদিনা পাতা একটি গুল্ম ভেষজ উদ্ভিদ। ভারত সহ অন্যান্য দেশে স্থানীয় নামে পরিচিত আমরা পুদিনা পাতা বলে থাকি। এই পাতার বিভিন্ন ধরনের ঔষধি গুন রয়েছে এবং রান্নার কাজে পুদিনা পাতার ব্যবহারের জন্য বেশ পরিচিত।
লেখক এর মন্তব্য পুদিনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে
প্রিয় পাঠক বিন্দু আজকে আমরা পুদিনার পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি, এই আর্টিকেলের মাধ্যমে ইতিমধ্যে আপনারা বিস্তারিত জেনে গিয়েছেন। কিভাবে পুদিনা পাতা খেলে উপকার পাওয়া যায়। পুদিনা পাতার একটি ভেষজ পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ উদ্ভিদ যার জরি মেলা ভার। আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা উপকৃত হবেন। আর আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিত্য নতুন আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। চেষ্টা করব প্রত্যেকদিন আপনাদের তথ্যমূলক পোস্ট পাবলিশ করতে। সম্মানিত পাঠক ধন্যবাদ প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমার সাথে থাকার জন্য আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে করার জন্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url