ঈদুল ফিতরের নামাজের ফজিলত ও রোজাদারদের জন্য সুসংবাদ
আমরা সবাই তো জানি ঈদ মুসলমানদের সবচেয়ে বড় আনন্দের উৎসব। ঈদ উপলক্ষে সারা বিশ্বের মুসলমানরা খুশি ও আনন্দের ঝাঁপিয়ে পড়ে। আর তারা সবাই মিলে নিয়ম করে ঈদের দিন বিশেষ নামাজ পড়া হয়। এটাই হলো ইসলামের নিয়ম ও বিধান।
সারা মাস রোজা রেখে ঈদের দিনে নামাজ পড়া সেই মুমিন ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা বিপুল সওয়াবে ভূষিত করবেন।
পোস্ট সূচিপত্র ঃ ঈদুল ফিতরের নামাজের ফজিলত ও রোজাদারদের জন্য সুসংবাদ
রোজাদারদের জন্য সুসংবাদ
বলার অপেক্ষা রাখে না যে ব্যক্তি এক মাস রোজা রাখে, আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে নেক আমল করবে। আল্লাহ ঐ ব্যক্তিকে দুনিয়া ও আখেরাতে অফুরন্ত সওয়াব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সৎ কাজ করা নর ও নারীকে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা পবিত্র জীবন দান করবে। আল্লাহ বলেন আমি তাদেরকে তারা যে আমল করত তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিফল দেব। ( সূরা নাহল, আয়ত : ৯৭)
অনুরূপভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে ব্যক্তি আল্লাহর অনুগত্য করবে, তাকে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে। তবে তার যে ভাষাই হোক না কেনও যে ব্যক্তি আমার অনুগত করবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। ( সহিহ বুখারি, হাদিস) এটি সকল নেক আমল সাধারণ সওয়াব ও প্রতিদান। তবে কিছু কিছু ইবাদত আল্লাহ অধিক গুরুত্বরোপ করে সেটাকে বিশেষত্ব দিয়েছেন।
সেগুলো হলো তাহাজ্জুতের নামাজ রমজান মাসে আপনি যদি তাহাজ্জুদ নামাজ পড়েন, তাহলে আল্লাহ তায়ালা আপনার জীবনের অনেক গুনা মোচন করবে, জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবেন। এই ইবাদতের জন্য আল্লাহ বিশেষ প্রতিদান দিয়ে থাকেন। আপনার নিকি কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে দিবেন।
ঈদুল ফিতরের নামাজের ফজিলত
ঈদুল ফিতরের নামাজের ফজিলতের ব্যাপারে বিশেষ কোনো কথা উল্লেখ করা হয়নি। তবে ঈদুল ফিতরের নামাজের প্রতিদান অপূর্ব সাধারণত দলিলগুলোতে বা অন্যান্য দলিলগুলোর অন্তর্ভুক্ত, আল্লাহতায়ালা বলেন যে ব্যক্তি সফলকাম হলো যে পরিশুদ্ধ হয়েছে, তার প্রতিপালকের নাম স্মরণ করে এবং সালাত আদায় করেছেন, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখেছে এবং রোজা রেখেছে। ( সুরা আ'লা, আয়াত : ১৪-১৫)
আরো পড়ুন ঃ কিভাবে চিয়া সিড খেলে ওজন কমবে জানুন
এর মধ্যেই কল্যাণকর সুসংবাদ রয়েছে সেটা হলো ঈদুল ফিতরের নামাজকে অন্তর্ভুক্ত করবে। শাইখ আবদুর রহমান সা'দী (রহ) বলেন যে অবশ্যই সফলকাম লাভবান হলো ব্যক্তি যে নিজেকে শির্ক জুলুম ও দুশ্চরিত্র থেকে পবিত্র করেছেন। আর যারা ফিতরা পরিশোধ করেছে, ঈদের নামাজ পড়েছে তারাই হলো একজন সফলকামী ব্যক্তি। ( তাফসিরে সা'দি, পৃষ্ঠা : ৯২১)
রোজাদারদের জন্য ১০টি সুখবর
আমরা অনেকেই জানি সাওমের অভিধানিক অর্থ হলো বিরত থাকা। অর্থাৎ পরিভাষায় বলা যায় দিনের বেলা নিজেকে খানাপিনা সহবাস থেকে নিজেকে বিরত রাখা। একজন মুসলমানের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। আল্লাহ ইরশাত করেছেন এবং বলেন ঈমানদারগণ তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিলো তোমাদের পূূর্ববতী লোকদের ওপর ফরজ করা ছিলো। (সূরা বাকারাহ- ১৮৪)
রোজা কেবল আমাদের জন্যই ফরজ করা হয়েছে বিষয়টা এমন নয়। বরং আমাদের পূর্ববর্তী নবী ও রাসূলদের উম্মতের জন্য ফরজ করা হয়েছিল। তবে আমাদের জন্য এই মাছটি বিশেষ একটি মাস। কারণ এই মাসের আল্লাহর তরফ থেকে আমাদের বিধান আল কুরআন নাযিল করা হয়েছে। মহান আল্লাহর রমজান মাসকে বিশেষ মর্যাদা ও সম্মানিত মহিমান্বিত করেছেন। পবিত্র মাহে রমজান মাসের মর্যাদার বর্ণনা এসেছে কুরআন ও হাদিসে অসংখ্য স্থানে।
যারা দিনের বেলা নিজেকে খাবার দাবার সহবাস অথবা হারাম কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখে। আল্লাহতালা শুধুমাত্র তার প্রতি সন্তুষ্ট। এবং তাদের জন্য ১০টি সুসংবাদ নিয়ে এসেছে। তাহলে চলুন জেনে আসি সুসংবাদ গুলো কি কি।
প্রথম ধাপঃরোজাদারদের জন্য বিশেষ পুরস্কার হলো প্রতিটি নেক আমলের পুরস্কার রয়েছে তবে রোজাদারদের জন্য আল্লাহ বিশেষ পুরস্কারের ব্যবস্থা রেখেছেন। হাদিসে বর্ণিত করেছেন মহান আল্লাহর বলেন আদম সন্তানের সন্তানের প্রতিটি আমল তার জন্য কিন্তু রোজা এর ব্যতিক্রম নয় কেননা তা আমার জন্য এবং আমি তার প্রতিদান দেব। (সহিহ বুখারি হাদিস : ১৯০৪)
দ্বিতীয় ধাপঃ রমজান মাস ক্ষমার মাস। আল্লাহ বলেন রোজাদার ব্যক্তি যদি আমার কাছে যেকোন কাজের জন্য ক্ষমা চায় তাহলে রমজান মাসে রোজা রাখা অবস্থায় আমি তাদেরকে ক্ষমা করি।
তৃতীয় ধাপঃ রোজাদারের প্রতি আল্লাহর ভালোবাসা, যারা অনিয়মিত একটি মাস রোজা রাখে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে অনেক ভালোবাসেন। আপনারা চাইলে নিচের হাদিসে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তা জেনে নিবেন। একজন রোজাদার ব্যক্তির মুখের গন্ধ মিসকের ঘ্রাণের চেয়ে উত্তম। ( হাদিস : ১৯০১)
চতুর্থ ধাপঃ রমজানে গুনাহ মাফ করা হয়। আর মহান আল্লাহ বলেন রমজান মাসে মুমিনের পাপ ক্ষমা করা হয়।
পঞ্চম ধাপঃ রোজাদারদের জন্য জান্নাতের বিশেষ দরজা খোলা হয়। যে ব্যক্তি রোজা রাখবে যে ব্যক্তি শুধু জান্নাতের এই দরজায় প্রবেশ করতে পারবে। তাছাড়া অন্য ব্যক্তি এই দরজায় প্রবেশ করতে পারবে না।
ষষ্ঠ ধাপঃ জাহান্নাম থেকে মুক্তিের মাস হলো রমজান মাস। সারাদিন রোজা রেখে ইফতারের সময় আল্লাহর কাছে থেকে ক্ষমা চেয়ে নিলে আল্লাহ জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয়।
সপ্তম ধাপঃ মুমিনের খুশির মাস হলো রমজান মাস। কারণ এই মাসে আল্লাহ তাআলা প্রত্যেকটা জিনিস এই বরকত ও রহমত দিয়েছেন এইজন্য রোজাদারদের অনেক আনন্দের একটি মাস।
অষ্টম ধাপঃ দোয়া কবুলের মাস হলো মাহে রমজান। আপনি যদি কোন সমস্যায় থাকেন অবশ্যই রমজান মাসে আল্লাহর কাছে চাবেন তাহলে আল্লাহ আপনার সকল সমস্যা দূর করে দিবে।
নবম ধাপঃ রোজা কিয়ামতের দিনে সুপারিশ করবে। যে ব্যক্তির রমজান মাসে রোজা রাখবে কিয়ামতের দিনে আমি রোজা ওই ব্যক্তির পক্ষ থেকে সুপারিশ করবে।
দশম ধাপঃ রোজা জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয়। রোজা রেখেছে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করবে নেক কাজ করবে আল্লাহতালা তাকে ৭০ বছরের দূরত্ব নিয়ে যাবে। ( সহিহুল বুখারি -২৮৪০)
লেখকের শেষ কথা রোজার ফজিলত কি
প্রত্যেকটা মুসলমানদের রোজা রাখা ফরজ তবে আমরা রোজা রাখি, কিন্তু পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি না অনেকেই কিন্তু এ বিষয়টা আমাদের অবহেলা করা উচিত নয়। কারণ রোজা আমাদের জন্য যেমন ফরজ তেমনি আল্লাহর ইবাদত বা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়াও আমাদের ফরজ এজন্য প্রত্যেকের উচিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং রোজা রাখা। আশা করছি আপনারা রোজার ফজিলত সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এবং ঈদের নামাজ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগবে। আর্টিকেলটি পরে যদি আপনি উপকৃত হন। অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আর আপনারা যদি কোন মতামত থাকে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আর কি বিষয়ে আর্টিকেল চান জানাতে ভুলবেন না। আপনার মহামূল্যবান সময় নষ্ট করে আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।
জুথি আর্টস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url